Home আন্তর্জাতিক ইরান হামলার আশঙ্কায় ব্রিটিশ ঘাঁটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি

ইরান হামলার আশঙ্কায় ব্রিটিশ ঘাঁটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইরান হামলার প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ও রকেট হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জন হিলি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি সামরিক স্থাপনায় সুরক্ষার স্তর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

রবিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মন্ত্রী বলেন, “ব্রিটিশ সেনাদের নিরাপত্তা এবং ঘাঁটিগুলোর সুরক্ষা আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা এই সপ্তাহে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছি।” জানা গেছে, সাইপ্রাসের আরএএফ আকরোতিরি, বাহরাইন ও ওমানের নৌঘাঁটি, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যৌথ বিমানঘাঁটিতে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে।

সম্প্রতি, ব্রিটিশ নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক ঘটনায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সাইপ্রাসে এক ব্রিটিশ নাগরিককে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। আরএএফ ব্রিজ নর্টনে ফিলিস্তিনপন্থী দুই বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা ভেদ করে দুটি বিমান রঙ করে দেয়—এ ঘটনায় দেশের ভেতরকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে ইরানের ওপর হামলা চালালেও, ইরান এখন পর্যন্ত শুধু আমেরিকাকে লক্ষ্য করে পাল্টা হুমকি দিয়েছে। তবে, ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলো ড্রোন বা রকেট হামলার শঙ্কা থেকে মুক্ত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানি তৈরি শাহেদ ড্রোন, যেগুলো ইউক্রেনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে, তা মধ্যপ্রাচ্যেও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ইরানি শাহেদ-১৩৬ ড্রোনে বর্তমানে শুধু ভবন ধ্বংসের সক্ষমতা নয়, প্রাণঘাতী ফ্র্যাগমেন্টেশন ও থার্মোবারিক বিস্ফোরক ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর এমন ড্রোন হামলার নজির রয়েছে। ফলে, ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলোতে অতিরিক্ত রাডার সিস্টেম মোতায়েন, টহল বাড়ানো, এবং জীবন্ত গোলাবারুদে সজ্জিত সেনা মোতায়েনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের ভেতরেও সামরিক নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। গত বছর দেশের বিভিন্ন মার্কিন বিমানঘাঁটির ওপর অজ্ঞাত ড্রোন উড়ার ঘটনায় সেনা মোতায়েন করা হয়। সাম্প্রতিক এক প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় ব্রিজ নর্টনের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়টি “অবিলম্বে উন্নয়নের অগ্রাধিকারে” রাখা হয়েছে।

পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, আধুনিক যুদ্ধ বাস্তবতায় সামরিক ঘাঁটিগুলোর রসদ, মজুদ এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের নতুন স্ট্র্যাটেজিক রিভিউতে ড্রোন প্রতিরোধে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ওয়েলসে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী সম্প্রতি প্রথমবারের মতো রেডিও ওয়েভ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ড্রোন দল ভূপাতিত করার সফলতা অর্জন করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সতর্কতা শুধু প্রতীকী নয়, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত আরও জটিল হলে ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলো সরাসরি টার্গেটে পরিণত হতে পারে।