আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও গভীর হচ্ছে। চতুর্থ দিনের মতো ইসরাইল ও ইরান পরস্পরের ওপর বিমান হামলা ও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। সোমবার (১৬ জুন) রাতে ইরান ফের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরাইলের তেল আবিব ও হাইফা শহরের দিকে। এর আগে সারাদিনব্যাপী ইসরাইল ইরানের বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ চালায়, যার মধ্যে রাজধানী তেহরানের পশ্চিমাংশ ও কেরমানশাহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও রয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল আইআরআইবি (ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং) ভবন ও কেরমানশাহর ফারাবি হাসপাতাল ইসরাইলি বিমান হামলায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজধানীর এক সামরিক ঘাঁটিতেও বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ইরানিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, উত্তরপশ্চিম তেহরানে বিমান হামলায় তাদের তিনজন উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছেন। তারা তখন কোনো সামরিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন না, বরং সম্পূর্ণ মানবিক সাহায্য কাজে অংশ নিচ্ছিলেন। হামলায় রেড ক্রিসেন্টের একটি অ্যাম্বুলেন্সও ধ্বংস হয়। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, “এই হামলা কেবল আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন নয়, বরং মানবতা ও নৈতিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।”
পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’-এর নবম ধাপ শুরু করেছে। আইআরজিসির মুখপাত্র বলেন, “ইহুদিবাদীরা শান্তিতে ও স্থিতিশীলতায় থাকতে পারবে না। আমরা তাদের প্রতি আমাদের প্রতিশোধের ধারাবাহিকতা বজায় রাখব।” এই অভিযানে বহু ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছে, যা মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত চলবে বলেও তিনি জানান।
ইরানের এই নতুন হামলার পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে। তেল আবিব শহরে সাইরেন বেজে ওঠে এবং নাগরিকদের সতর্ক অবস্থানে যেতে বলা হয়। হামলার সময় আতঙ্কে অনেকেই বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন।
এখনও পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়নি। তবে পরিস্থিতি দিনদিন উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সংঘাত বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে না পারলে আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।