Home স্বাস্থ্য উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের ঝুঁকি: দিনে কতবার প্রেশার মাপা জরুরি?

উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের ঝুঁকি: দিনে কতবার প্রেশার মাপা জরুরি?

হেলথ ডেস্ক: অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বর্তমান সময়ে হার্টের বড় ধরনের সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। রক্তচাপের এই ওঠানামা বুঝতে অনেকেই বাড়িতে ডিজিটাল প্রেশার মাপার যন্ত্র কিনে রাখেন। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির রক্তচাপ সাধারণত ১২০/৮০ থাকার কথা। কিন্তু এর ব্যত্যয় ঘটলেই চিন্তার ভাঁজ পড়ে কপালে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বাড়িতে যন্ত্র থাকলেই যখন-তখন বা ক্ষণে ক্ষণে প্রেশার মাপা ঠিক নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

দিনে কতবার রক্তচাপ মাপা উচিত?
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ইতিমধ্যে রয়েছে, তাদের নিয়মিত রক্তচাপের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে হাতের কাছে ডিজিটাল যন্ত্র রাখা জরুরি। তবে তার মানে এই নয় যে কিছুক্ষণ পর পর মাপতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের যেকোনো সময়ে মাত্র একবার রক্তচাপ মেপে নিলেই চলে। যদি সময়ের অভাব থাকে, তবে একদিন অন্তর বা সপ্তাহে কয়েকবার মাপলেও হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রক্তচাপের রিডিং বা তথ্যগুলো তারিখসহ লিখিতভাবে সংরক্ষণ করা। এতে চিকিৎসকের পক্ষে রোগীর সঠিক অবস্থা বোঝা এবং ওষুধ নির্ধারণ করা সহজ হয়।

তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে ঝুঁকি
সাধারণত ধারণা করা হয়, রক্তচাপের সমস্যা শুধু বয়স্কদেরই হয়। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে ইদানীং ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও হাইপারটেনশনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। তাই বয়স কম মনে করে অবহেলা করার সুযোগ নেই।

কাদের নিয়মিত মাপা জরুরি?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের রোজ মাপার প্রয়োজন নেই। তবে যাদের রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত অথবা যারা সদ্য প্রেশারের ওষুধ খাওয়া শুরু করেছেন, তাদের ‘ফলোআপ’ হিসেবে নিয়মিত মনিটরিং করা অত্যাবশ্যক। এ ক্ষেত্রে আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা মেনে সঠিক যন্ত্রটি কেনা জরুরি।

সঠিক রিডিং পেতে ৩টি জরুরি সতর্কতা
বাড়িতে রক্তচাপ মাপার সময় সঠিক ফলাফল পেতে চিকিৎসকরা তিনটি বিশেষ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন:

১. ৩০ মিনিটের বিরতি: রক্তচাপ মাপার অন্তত ৩০ মিনিট আগে কোনো ধরনের ভারী কাজ, শরীরচর্চা বা দ্রুত হাঁটা যাবে না। এমনকি এই সময়ের মধ্যে খাবার গ্রহণ, ধূমপান বা মদ্যপান করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।

২. প্রস্রাবের চাপ: রক্তচাপ মাপার আগে অবশ্যই মূত্রত্যাগ করে নেওয়া উচিত। প্রস্রাবের বেগ বা চাপ থাকলে সাময়িকভাবে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যা ভুল রিডিং দিতে পারে।

৩. বিপদসীমা ও লক্ষণ: যদি রক্তচাপের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় (যেমন ১৫০/১২০-এর কাছাকাছি), তবে কালক্ষেপণ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে যদি বুকে চাপ, চিনচিনে ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্ট থাকে, তবে তা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং সঠিক নিয়ম মেনে রক্তচাপ মাপলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।