Home আকাশ পথ উড়োজাহাজ শিল্পের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা

উড়োজাহাজ শিল্পের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা

সংকটের কালো মেঘে ঢাকা ভবিষ্যৎ*৫,৩০০ বিমানের ঘাটতি * ১৭,০০০ অর্ডার ব্যাকলগ

এভিয়েশন ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ শিল্প এক নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (IATA) জানিয়েছে, নতুন বিমানের তীব্র ঘাটতি এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহ শৃঙ্খলে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার কারণে এই শিল্পে প্রবৃদ্ধির গতি থমকে গেছে, যা অন্তত ২০৩১ থেকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫,৩০০ বিমানের সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে এবং ১৭,০০০ বিমানের অর্ডার ব্যাকলগ জমেছে, যা মেটানো বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী প্রায় ১২ বছর সময়সাপেক্ষ।

দীর্ঘমেয়াদী সংকটের কারণ ও প্রভাব

আইএটিএর তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে বিমান সরবরাহ উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত হয়েছে। বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা এবং এয়ারলাইনগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদার মধ্যে একটি কাঠামোগত অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। এর ফলে এয়ারলাইনগুলোর বহরের গড় বয়স বেড়ে ১৫.১ বছরে দাঁড়িয়েছে, যা জ্বালানি দক্ষতা এবং পরিবেশগত লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে বড় বাধা।

এয়ারলাইনগুলোর উপর প্রভাব:

পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি: পুরোনো বিমান ব্যবহারে বাধ্য হওয়ায় জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাড়ছে।

প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত: নতুন রুট চালু বা ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যমান সেবাও কমাতে হচ্ছে।

সংযোগ হ্রাস: বিশেষ করে দ্বিতীয় সারির এবং উন্নয়নশীল বাজারগুলোতে বিমান সংযোগ কমে যাচ্ছে।

উচ্চ ভাড়া: সরবরাহ সংকটের কারণে ভ্রমণ ব্যয় বাড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে যাত্রীদের ওপর।

আইএটিএর মহাপরিচালক উইলি ওয়ালশ বলেন, “বিমান ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ শৃঙ্খলের সংকট এয়ারলাইনগুলোর ব্যবসার প্রতিটি স্তরে প্রভাব ফেলছে। লিজিং খরচ বেড়েছে, সময়সূচি ব্যবস্থাপনার নমনীয়তা কমেছে, টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতি বিলম্বিত হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে অনুপযোগী বিমান ব্যবহারে নির্ভরতা বাড়ছে।”

উৎপাদন জট এবং নতুন চ্যালেঞ্জ

বিমান উৎপাদন জটের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ইঞ্জিন উৎপাদনে ধীরগতি: এয়ারফ্রেম উৎপাদনের তুলনায় ইঞ্জিন উৎপাদনে ধীরগতি একটি বড় সমস্যা।

সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া: নতুন বিমানের সার্টিফিকেশন পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে।

বাণিজ্যিক উত্তেজনা: যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য উত্তেজনার ফলে ধাতু ও ইলেকট্রনিক্সের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে।

শ্রমিক সংকট: ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনে দক্ষ কর্মীর অভাব উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

পরিবেশগত লক্ষ্য অর্জন কঠিন

বহর পুরোনো হওয়ার কারণে জ্বালানি দক্ষতার উন্নতি মন্থর হয়ে পড়েছে। আগে যেখানে বছরে গড়ে ২% জ্বালানি দক্ষতা বাড়ত, সেখানে ২০২৫ সালে তা কমে মাত্র ০.৩%-এ দাঁড়িয়েছে। ২০২৬ সালে এটি ১%-এ উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com