বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলের বালুময় প্রান্তরে, নাইজারের উডাবে উপজাতি পালিত করে এক রঙিন ও বৈচিত্র্যময় বিয়ের উৎসব—যেখানে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায়। এখানে পাত্র নয়, পাত্রীরাই বর পছন্দ করে, আর পাত্ররা হয় বিয়ের জন্য সাজানো ‘প্রদর্শনশালা’র অংশ।
এই রীতিকে বলা হয় “Gerewol Festival”—এটি একাধারে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, প্রেমের উৎসব এবং বিয়ের মঞ্চ।
কী হয় এই উৎসবে?
প্রতি বছর বিয়ের মৌসুমে, উডাবে গোত্রের অবিবাহিত পুরুষরা একত্রিত হয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ রূপে সাজে। মুখে রঙ করে, ঠোঁট ও চোখকে বিশেষভাবে হাইলাইট করে এবং শরীরে আলংকারিক পোশাক পরে তারা প্রস্তুত হয় ‘Wodaabe dance’ নামক এক আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতার জন্য।
তারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাচে, হাসে, চোখ বড় করে তাকায়—সবই মেয়েদের আকৃষ্ট করার জন্য। সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষকেই তারা পছন্দ করে।
কেমন হয় মেয়েদের সিদ্ধান্ত?
এই রীতিতে মেয়েদের হাতে থাকে চূড়ান্ত ক্ষমতা। তারা দল থেকে বেরিয়ে এসে যাকে পছন্দ করে, তার সামনে গিয়ে কাপড় ছুঁয়ে দেয় অথবা সরাসরি তার হাত ধরে। অর্থাৎ, সে-ই হচ্ছে ভবিষ্যতের বর।
এই সমাজে নারীর ভালোবাসার স্বাধীনতা স্বীকৃত। কেউ বিবাহিত হলেও অন্য পুরুষকে বেছে নিতে পারে, এবং তা সমাজে গ্রহণযোগ্য।
সৌন্দর্যের মাপকাঠি
উডাবে সমাজে পুরুষদের সৌন্দর্য বিবেচনায় মুখের গড়ন, উচ্চতা, দাঁতের সাদা ভাব এবং চোখের শক্তি গুরুত্বপূর্ণ। নাচ ও মুখভঙ্গির মাধ্যমে তারা তাদের গুণ প্রকাশ করে।
পুরুষরা বিশ্বাস করে—নিজেকে যত আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, প্রেমে ততটাই সাফল্য মেলে।
নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক?
অনেক সমাজে নারীর বিয়ে মানেই পিতার পছন্দে, কিন্তু উডাবে উপজাতিতে প্রেম ও বিয়ে সম্পূর্ণ মেয়ের নিজের সিদ্ধান্তে হয়। এটি এক অনন্য উদাহরণ, যেখানে সমাজ নারীর পছন্দকে উৎসাহ দেয়।
লোকজ সংস্কৃতির আলোকছটা
Gerewol উৎসব কেবল বিয়ে নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক মিলনমেলা—গান, নাচ, পোশাক, রঙ ও ভালোবাসার অভিব্যক্তিতে ভরা। এটি প্রমাণ করে, ভালোবাসার উৎসব শুধু মঞ্চ নয়, হতে পারে মরুভূমির বালুয়েও।