তিন কিশোরে দুইজনই এআই সঙ্গীর ব্যবহারকারী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরদের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) সঙ্গীর ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জরিপ বলছে, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রতি চার কিশোর-কিশোরীর মধ্যে প্রায় তিনজন অন্তত একবার এআই সঙ্গী ব্যবহার করেছে, আর তাদের অর্ধেকের বেশি নিয়মিত এসব প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকে।
ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাতে জানা গেছে, “কমন সেন্স মিডিয়া” নামক যুক্তরাষ্ট্রের একটি শিশুবান্ধব প্রযুক্তি মূল্যায়নকারী সংস্থা এই জরিপ পরিচালনা করে। এতে অংশ নেয় মোট ১ হাজার ৬০ জন কিশোর।
এআই সঙ্গী কী?
চ্যাটজিপিটি’র মতো সহায়ক এআই ব্যবস্থার বিপরীতে, এইসব সিস্টেম—যেমন Character.AI, Replika বা Nomi—ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে তৈরি। এগুলো শুধু তথ্য দেওয়া বা কাজ সম্পন্ন করাই নয়, বরং ব্যবহারকারীর সঙ্গে আবেগভিত্তিক বন্ধন তৈরিতে সক্ষম।
কেন ব্যবহার করছে কিশোররা?
জরিপ অনুযায়ী, ৩০ শতাংশ কিশোর বলেছে তারা এটি ব্যবহার করে কারণ এটি ‘বিনোদনমূলক’, আর ২৮ শতাংশের মতে তাদের কৌতূহল থেকেই ব্যবহার শুরু। তবে আরও গভীর একটি প্রবণতা দেখা গেছে—প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কিশোর জীবনের গুরুতর বিষয় নিয়ে এআই সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করেছে, বাস্তব মানুষের সঙ্গে না করে।
ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ও অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা
২৪ শতাংশ কিশোর স্বীকার করেছে যে তারা নিজের প্রকৃত নাম ও অবস্থানসহ ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেছে এআই সঙ্গীদের সঙ্গে। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে, ৩৪ শতাংশ কিশোর জানিয়েছে, কখনো না কখনো তারা এআই সঙ্গীর আচরণে অস্বস্তি অনুভব করেছে।
বিশ্বাসের বয়সভিত্তিক বিভাজন
তরুণ কিশোর (১৩-১৪ বছর বয়সী) ব্যবহারকারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি আস্থা রাখছে এআই সঙ্গীদের উপদেশে। তবে সামগ্রিকভাবে ৫০ শতাংশ কিশোর এই উপদেশকে বিশ্বাস করে না।
মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব এখনো আছে
স্বস্তির কথা হচ্ছে, দুই-তৃতীয়াংশ কিশোর জানায়, এআই সঙ্গীদের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে বাস্তব মানুষের সঙ্গে আলাপ বেশি তৃপ্তিদায়ক। এমনকি ৮০ শতাংশ কিশোর বাস্তব বন্ধুদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটায়।
সতর্কবার্তা ও সুপারিশ
কমন সেন্স মিডিয়া সতর্ক করে বলেছে, “যেহেতু প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কিশোর ইতোমধ্যে এই প্রযুক্তির সংস্পর্শে এসেছে, এমনকি ছোট সংখ্যায় সমস্যাও হলেও তা অনেক কিশোরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।” সংস্থাটি সুপারিশ করেছে, ১৮ বছরের নিচে কেউ যেন এ ধরনের এআই সঙ্গী ব্যবহার না করে যতক্ষণ না কার্যকর সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তাদের হুঁশিয়ারি, “কোম্পানিগুলো অতীতেও শিশুদের কল্যাণের চেয়ে মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এবার যেন সেই ভুল না হয়।”
👉 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন বিজনেসটুডে২৪.কম।