Home সারাদেশ সড়কে ঝরে গেল তিন তরুণ প্রাণ: একটি বিকেলের লাশবাহী গল্প

সড়কে ঝরে গেল তিন তরুণ প্রাণ: একটি বিকেলের লাশবাহী গল্প

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, মাগুরা: একটি বিকেল। তিন তরুণ বন্ধু মোটরসাইকেলে করে ছুটে চলেছেন গ্রামের পথ ধরে, মাগুরা সদর থেকে ইছাখাদা বাজারের দিকে। প্রতিদিনের মতোই আড্ডা, হাসি, আর ঘোরাঘুরির এক নিস্পাপ পরিকল্পনা। কিন্তু সেই রোববারের বিকেলটি শেষ হলো নিস্তব্ধ লাশবাহী এক কালো রাতের মাধ্যমে।

মাগুরা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক সড়কের আবালপুর এলাকায় গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে তিন তরুণ শিক্ষার্থী—রবিন (২২), জিসান (১৮) ও সাজিম (২২)। তারা সবাই মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনজনই বন্ধু, একই ক্লাসের ছাত্র, একই স্বপ্ন ছিল হয়তো—ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মামুন মোল্যা জানান, রবিন ছিলেন মোটরসাইকেলের চালক। সদরের ইটখোলা বাজার থেকে তারা তিনজন একটি বাইকে করে যাচ্ছিলেন ইছাখাদা বাজারের দিকে। রবিন নানা ভঙ্গিমায় বাইক চালাচ্ছিলেন। তখন তাদের পেছনে ঢাকা থেকে খুলনাগামী দুটি বড় পরিবহন আসছিল। একটি পরিবহন তাদের অতিক্রম করে সামনে গেলে রবিন সেটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান। বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লোকাল বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

দুর্ঘটনাটি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, রবিন ও সাজিম বাসের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় জিসানকে, তবে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাগুরা রামনগর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক সিদ্ধান্ত সাহা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি লাশ উদ্ধার করে এবং বাসটিকে থানায় হেফাজতে নেয়। “তিনটি পরিবারের স্বপ্ন এই এক বিকেলেই শেষ হয়ে গেল,” বলেন তিনি।

গ্রামে এখন শোকের ছায়া। তিনটি বাড়ি থেকে ভেসে আসছে বুকফাটা কান্না। মায়ের বুক খালি, বন্ধুরা নির্বাক। কলেজের সহপাঠীদের চোখে পানি, তারা বলছে—”ওরা শুধু আমাদের সহপাঠী ছিল না, প্রাণ ছিল।”

এই দুর্ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দিল আমাদের দেশের তরুণদের বেপরোয়া বাইক চালনার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে। কেউ কারও বাবা-মাকে সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারবে না, কিন্তু সড়ক নিরাপত্তা আর সচেতনতা বাড়ালে হয়তো পরবর্তী এমন মিছিলে নতুন কোনো নাম যোগ হতো না।


📢 আপনার দায়িত্ব: সচেতনতা ছড়ান, জীবন বাঁচান

এই প্রতিবেদনটি যদি আপনার হৃদয় স্পর্শ করে, তবে অনুগ্রহ করে এটি শেয়ার করুন, যাতে আরও মানুষ সচেতন হয়। বন্ধুদের ট্যাগ করুন, পরিবারকে জানান—চলো একসঙ্গে নিরাপদ সড়ক গড়ি।

👍 লাইক দিন, যদি আপনি বিশ্বাস করেন সচেতনতা গড়তে সংবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।