Home সারাদেশ এতিমখানার গরু লুট লাকসামে

এতিমখানার গরু লুট লাকসামে

ছবি এ আই

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, লাকসাম, কুমিল্লা: তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা কুমিল্লার লাকসামের এক এতিমখানার শিশুদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার গরুর খামারে দুষ্কৃতকারীদের ধারাবাহিক হামলায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২টি দুধের গরু লুটের পর চরম আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা ভর করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং ছাত্রদের মাঝে। খামারের আয়ে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটির প্রাণশক্তি কেড়ে নেওয়ায় এখন অসহায়ত্বের ছায়া নেমে এসেছে।

গত শুক্রবার ভোরে সর্বশেষ ডাকাতির ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক, কেয়ারটেকার ও ছাত্রসহ আটজন আহত হয়েছেন। ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে ৫টি গরু দুটি পিকআপ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। এর তিন মাস আগেও একইভাবে ৭টি গরু লুট করে নিয়ে গিয়েছিল ডাকাতেরা। এখন খামারে মাত্র ১১টি গরু অবশিষ্ট আছে, আর গরুশূন্য খাঁ খাঁ করছে খামারের একাংশ।

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, “এই গরুর খামারটিই ছিল মাদ্রাসার আয়ের প্রধান উৎস। এর অর্থ দিয়েই এতিম শিশুদের ভরণপোষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা হতো। বারবার ডাকাতির ঘটনায় আমরা দিশেহারা। আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় আছি।” মামলার বাদী মাদ্রাসা শিক্ষক ইমরান হোসাইন এ ঘটনায় লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি জানান, ডাকাতরা গরু ওঠানোর জন্য সঙ্গে করে তুষের বস্তা পর্যন্ত নিয়ে এসেছিল।

এলাকাবাসী এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে লুট হওয়া গরু উদ্ধার ও ডাকাতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন, একবার ডাকাতির পর কেন মাদ্রাসার নিরাপত্তা জোরদার করা হলো না এবং কেনই বা দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পেলো ডাকাতরা? লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা জানিয়েছেন, লুট হওয়া গরু উদ্ধার ও ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

কিন্তু শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে বিরাজ করছে গভীর আতঙ্ক। বারবার এমন হামলার শিকার হওয়ায় মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রমেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। যে খামার এতিম শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতো, সেই খামারই এখন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসহায় প্রতিষ্ঠানটির পাশে দাঁড়িয়ে তাদের নিরাপত্তা ও হারানো সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে।