বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৬ জুলাই। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নতুন অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারায় এই অন্তর্বর্তী সময়টায় বন্দর কর্তৃপক্ষই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব নেবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জুন অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । নতুন অপারেটর নিয়োগে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। এ সময়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কিউ গ্যান্ট্রি ক্রেন, রাবার-টাইয়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার জন্য আনুমানিক ৪২ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে ১৯ জুন মন্ত্রণালয়কে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে মাসিক পরিচালন ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৭ কোটি টাকা। এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদের অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বরাবর।
এর আগে, বন্দর কর্তৃপক্ষ সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে তিন মাসের জন্য চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করে সরাসরি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। জরুরি প্রয়োজনে ২০০৬ সালের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-এর ৬৮ ধারা ও ২০০৮ সালের বিধির ৭৬(২) অনুসারে ‘ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড’ প্রয়োগের বিধান রয়েছে।
বর্তমানে এনসিটি পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগের প্রস্তুতি চলছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসি ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করছে। তাদের পরামর্শেই বন্দর কর্তৃপক্ষ সাময়িক মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। সরকার আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি চায়। তবে বিদেশি অপারেটর আনার উদ্যোগের বিরোধিতা করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন ও পেশাজীবী মহল। তাদের মতে, দেশীয় অর্থে নির্মিত টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে দেওয়া অনুচিত।
এনসিটির পাঁচটি বার্থ। সেখানে সর্বোচ্চ ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারে। এর সক্ষমতা ১১ লাখ টিইইউ হলেও বর্তমানে হ্যান্ডল হচ্ছে ১৩ লাখ টিইইউ। এখান থেকে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্র জানায়, নিজস্ব অর্থায়নে ২০০৭ সালে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। প্রথম দুই বছর উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পরিচালনার পর থেকে সাইফ পাওয়ারটেক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এনসিটি পরিচালনা করে আসছে। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ছয় মাসের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।