Home Second Lead এফবিসিসিআই নির্বাচন ঘিরে জোর প্রস্তুতি, দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত প্রার্থীরা

এফবিসিসিআই নির্বাচন ঘিরে জোর প্রস্তুতি, দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত প্রার্থীরা

আমিরুল মোমেনিন, ঢাকা: দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আগামী দুই মেয়াদ (২০২৫–২৬ ও ২০২৬–২৭) নির্বাহী পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে নির্বাচন ও নির্বাচন আপিল বোর্ড। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত এ বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এফবিসিসিআইয়ের নতুন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মো. আব্দুর রাজ্জাককে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন যুগ্ম সচিব মুর্শেদা জামান ও মুস্তাফিজুর রহমান। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান। সদস্য হিসেবে আছেন যুগ্ম সচিব তানভীর আহমেদ ও উপসচিব ড. মো. রাজ্জাকুল ইসলাম।

২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংগঠনটিতে নেতৃত্ব বদলের দাবি জোরদার হয়। সে সময় আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী নেতারা পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ান। পরে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদ বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

এ দীর্ঘ অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণে ফেডারেশন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এমনকি সদ্য ঘোষিত ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়েও সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, যা নিয়ে ব্যবসায়ী মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচন আয়োজনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। নিজ নিজ গ্রুপের মনোনয়ন পেতে নানাভাবে সক্রিয় হচ্ছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে নতুন বিধিমালার আলোকে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও কঠিন হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা ৮০ থেকে কমিয়ে ৪৬ জনে আনা হয়েছে। মনোনীত পরিচালক সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে ১২ জনে নেমেছে। নারী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে দুটি প্রতিনিধি রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সর্বাধিক আলোচিত বিধান হলো কেউ টানা দুই মেয়াদের বেশি পর্ষদে থাকতে পারবেন না। এর ফলে বহু প্রভাবশালী নেতা এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হারাতে যাচ্ছেন।

নতুন বিধিমালায় সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির পদ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের জন্য আলাদাভাবে নির্ধারিত হয়েছে। সাধারণ পরিষদের মনোনীত পরিচালকদের জন্য ২০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

নির্বাচনকে ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কেউ কেউ বলছেন, এসব বিধিনিষেধ প্রতিযোগিতার সুযোগ সীমিত করে দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে এফবিসিসিআই নতুনভাবে সক্রিয় হবে এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।