Home আন্তর্জাতিক জাহাজে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, উদ্ধার তৎপরতায় যুদ্ধজাহাজ

জাহাজে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, উদ্ধার তৎপরতায় যুদ্ধজাহাজ

ছবি সংগৃহীত

মেরিটাইম ডেস্ক: কেরালা উপকূলের কাছে বঙ্গোপসাগরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি ওয়ান হাই ৫০৩’। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জাহাজটিতে বিস্ফোরণের খবর যায় মুম্বইয়ের মেরিটাইম অপারেশনস সেন্টারে। দ্রুত খবর পৌঁছে দেওয়া হয় কোচির নৌসেনা ঘাঁটিতে। এরপর উদ্ধার তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতীয় নৌবাহিনী।

জানা গেছে, কলম্বো থেকে গত ৭ জুন যাত্রা শুরু করে জাহাজটি, গন্তব্য ছিল মুম্বই। ১০ জুন মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই বেপোর উপকূল থেকে ৭৮ নটিক্যাল মাইল দূরে ঘটে এই বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুরাত এবং যুদ্ধবিমান। পাশাপাশি, কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকেও পাঠানো হয়েছে একাধিক জাহাজ ও ডর্নিয়ার বিমান।

জাহাজটিতে মোট ২২ জন নাবিক ছিলেন। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, এর মধ্যে ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। চারজন এখনও নিখোঁজ। উদ্ধার হওয়া কয়েকজন নাবিক গুরুতর আহত হয়েছেন।  চিকিৎসার জন্য উপকূলের কাছে প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাসপাতাল। নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে তল্লাশি।

জানা গেছে, জাহাজটির অধিকাংশ নাবিক তাইওয়ানের নাগরিক। তারা বিস্ফোরণের পর লাইফ র‌্যাফ্ট ও লাইফবোটে করে জাহাজ ত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে নিকটবর্তী বাণিজ্যিক জাহাজ ‘এমভি ওয়ান মার্ভেল’ গ্রহণ করেছে।  সংকটাপন্ন জাহাজটিকে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছিল মেরিটাইম দপ্তর।

ঘটনার পর থেকেই কেরালা রাজ্যের কোঝিকোড় ও এরনাকুলাম জেলার কালেক্টরদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগুনের উৎস কী, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা জাহাজে। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, আন্ডারডেকে সংরক্ষিত কিছু বিপজ্জনক মালপত্র থেকেই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। মালিকপক্ষকে অবিলম্বে পণ্য সম্পর্কিত তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করে সিঙ্গাপুরের  প্রশাসন এবং জাহাজ মালিক সংস্থা ওয়ান হাই লাইন্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা দ্রুত পেশাদার উদ্ধারকারী ও অগ্নি নির্বাপক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে। ইতিমধ্যে এসএমআইটি স্যালভেজ-এর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

উদ্ধারকাজ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে ডিরেক্টরেট অফ শিপিং, কোস্ট গার্ড ও স্থানীয় প্রশাসন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জাহাজের ভেতর এখনও জ্বলছে আগুন, যার ফলে নতুন বিস্ফোরণের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে কাছাকাছি চলাচলকারী অন্যান্য জাহাজগুলোকে।

এখনও পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা জোরকদমে চলছে। প্রয়োজন হলে আরও যুদ্ধজাহাজ ও বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভারতীয় নৌসেনা জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।