বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দ্বিতীয় দফায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্বামী ও মামলার বাদী। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে তিনি এ সাক্ষ্য দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন। তিনি জানান, আদালতে বাদীর দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুক্তভোগী তরুণীর সাক্ষ্য ‘ক্যামেরা ট্রায়াল’ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ১৯ মে মামলার বাদীর আংশিক সাক্ষ্য ও এমসি কলেজের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ আচার্য্যের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। পরে তার স্বামী শাহপরান থানায় মামলা করেন। ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুজনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার পর দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখা দেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুলিশ ও র্যাব অভিযানে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএ নমুনা ভুক্তভোগীর শরীরে পাওয়া নমুনার সঙ্গে মিলে যায়।
২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে শাহপরান থানার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আসামিরা হলেন—সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান (রনি), তারেকুল ইসলাম (তারেক), অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন (আইনুল), মিসবাউল ইসলাম (রাজন), রবিউল ও মাহফুজুর। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা উঠে আসায় সংগঠন থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়। একই সময় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এমসি কলেজের এই ঘটনা শুধু সিলেট নয়, সারাদেশে নারী নিরাপত্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। মামলার অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের নেতারাও সময় সময় প্রতিক্রিয়া দিয়ে আসছেন।
আসন্ন সাক্ষ্যপর্বে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি মামলার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।