Home আকাশ পথ ব্রিটেনে সময়ানুবর্তিতায় সবচেয়ে পিছিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া

ব্রিটেনে সময়ানুবর্তিতায় সবচেয়ে পিছিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া

ছবি সংগৃহীত

এভিয়েশন ডেস্ক:

লন্ডন: ব্রিটেনে গত বছরে সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বিলম্বের রেকর্ড গড়েছে ভারতের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। যুক্তরাজ্যের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি) এর তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘পিএ নিউজ এজেন্সি’।

২০২৪ সালে যুক্তরাজ্য থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রা শুরু করা ফ্লাইটগুলো গড়ে ৪৫ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড দেরিতে ছেড়েছে। এর মধ্যে গ্যাটউইক থেকে বেঙ্গালুরু রুটে গড় বিলম্ব সময় ছিল এক ঘণ্টা ২৩ মিনিট আর তা ছিল সবচেয়ে দীর্ঘ।

কনজিউমার ম্যাগাজিন ‘উইচ ট্রাভেল’-এর সম্পাদক ররি বোল্যান্ড এই পারফরম্যান্সকে “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভাড়া অনেক বেশি হলেও যাত্রীদের নির্ভরযোগ্য সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।”

এয়ার ইন্ডিয়া অবশ্য দাবি করেছে, অধিকাংশ দেরির জন্য দায়ী ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা বিষয়, যেমন- আবহাওয়া, বিমানবন্দরের অবস্থা এবং আকাশপথে ভিড়।

বিলম্বে দ্বিতীয় স্থানে গার্নসিভিত্তিক ‘অরিগনি এয়ার সার্ভিস’ (৩১ মিনিট ১২ সেকেন্ড) এবং তৃতীয় স্থানে তুরস্কের বাজেট সংস্থা ‘সানএক্সপ্রেস’ (২৯ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড)। সবচেয়ে ভালো সময়ানুবর্তিতার নজির স্থাপন করেছে আইরিশ ‘এমারাল্ড এয়ারলাইনস’, তাদের গড় বিলম্ব মাত্র ১০ মিনিট ৩০ সেকেন্ড।

সারা বছর ২৫০০-এর বেশি নির্ধারিত এবং চার্টার ফ্লাইট পরিচালনা করা সংস্থাগুলোর মধ্যে গড় বিলম্ব ছিল ১৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড, ২০২৩ সালের তুলনায় কিছুটা কম।

এয়ার ইন্ডিয়ার ব্রিটিশ কার্যক্রম পরিচালিত হয় হিথ্রো, গ্যাটউইক ও বার্মিংহাম বিমানবন্দর থেকে। সংস্থাটি লন্ডন থেকে দিল্লি, মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুসহ একাধিক ভারতীয় শহরে ফ্লাইট চালায়। ২০২৪ সালে তারা যুক্তরাজ্য থেকে ২০১৯ সালের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে এবং ২০২৫ সালে এই হার ৯০ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, টাটা গ্রুপ ২০২২ সালে এয়ার ইন্ডিয়াকে কিনে নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি কাঠামোগত সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অনেক যাত্রী তাদের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে হতাশ।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জন স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, “টাটা অধিগ্রহণের আগের বিশৃঙ্খলা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে সংস্থাটি। এখন তাদের প্রকৌশল, জনবল ও খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহে মনোযোগ দিতে হবে।”

তবে এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে তাদের অন-টাইম পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। এছাড়াও নতুন এয়ারবাস A৩৫০ ও উন্নত B৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ যুক্ত করায় সেবার মানও বেড়েছে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির ভোক্তা বিষয়ক প্রধান আনা বোয়েলস বলেন, “যাত্রীরা যেন নির্ভরযোগ্য ও সময়ানুগ সেবা পান, তা নিশ্চিত করা সব এয়ারলাইনের দায়িত্ব। বিলম্ব যেকোনো কারণে ঘটুক না কেন, যাত্রীদের অধিকার ও সঠিক তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক।”

এদিকে, ফ্লাইট দেরি হলে যাত্রীরা খাদ্য, যাতায়াত ও আবাসনসহ সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার রাখেন। নিয়ন্ত্রণযোগ্য কারণে দেরি হলে ক্ষতিপূরণও দাবি করা যেতে পারে। তবে তা  সর্বোচ্চ ৫২০ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে।