Home আকাশ পথ বিমান চলাচলে বাধা ও বাড়তি খরচে বিপাকে এয়ার ইন্ডিয়া

বিমান চলাচলে বাধা ও বাড়তি খরচে বিপাকে এয়ার ইন্ডিয়া

এভিয়েশন ডেস্ক:  আকাশপথ বন্ধ থাকা এবং নতুন জেট সরবরাহে বিলম্বের কারণে সময়মতো ফ্লাইট পরিচালনায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া অনুষ্ঠানে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যাম্পবেল উইলসন স্বীকার করেছেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে বিমান চলাচলে বাধা তৈরি হয়েছে।

উইলসন বলেন, “আকাশপথে সীমাবদ্ধতা আমাদের সময়ানুবর্তিতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা সর্বদা উন্নতির উপায় খুঁজছি।” জুনে আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার দুর্ঘটনার পর এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য।

ভারতীয় বিমানের ওপর পাকিস্তানের আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা বর্তমানে এয়ার ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি। গত ২৪ এপ্রিল ইসলামাবাদ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যখন ভারত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পায়।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান এই নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত করেছে। এতে ভারতীয় বিমানগুলোকে আন্তর্জাতিক রুটে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে, ফলে ফ্লাইটের সময় বৃদ্ধি ও জ্বালানি খরচ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।

রয়টার্সের হাতে পাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি পাকিস্তানের আকাশপথে নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থায়ী হয়, তাহলে সংস্থাটিকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হতে পারে। একই সমস্যায় পড়েছে ভারতের অন্য বিমান সংস্থা ইন্ডিগোসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

অন্যদিকে, পাকিস্তান এয়ারপোর্টস অথরিটি (পিএএ) জানায়, ভারতীয় নিবন্ধিত বিমানের জন্য আকাশপথ বন্ধ রাখার দুই মাসের মধ্যেই আগস্ট মাসে তাদের ৪.১ বিলিয়ন রুপি রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার ওপর চাপ আরও বেড়েছে নতুন বিমান সরবরাহে বিলম্ব এবং জুনের ১২ তারিখের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে, যেখানে ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর থেকে টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া নিরাপত্তা মান লঙ্ঘনের নানা অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছে—এর মধ্যে রয়েছে জরুরি সরঞ্জাম পরীক্ষা না করে বিমান চালানো, সময়মতো ইঞ্জিন অংশ পরিবর্তন না করা, নথি জালিয়াতি, এবং ক্রুদের অতিরিক্ত ক্লান্তির বিষয়টি উপেক্ষা করা।

ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থা তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ফুয়েল ইঞ্জিন সুইচ দুটি উড্ডয়নের কিছু পরেই একসঙ্গে ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’-এ চলে যায়, যা প্রযুক্তিগত বা মানবিক ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়।

উইলসন বলেন, “ব্যবসায়িকভাবে এই বছরটি আমাদের জন্য বেশ কঠিন হবে,” তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে এয়ার ইন্ডিয়া তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং যাত্রীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।