স্পোর্টস ডেস্ক:
দুবাই: দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহে আজ রোববার এশিয়া কাপের বহুল প্রতীক্ষিত ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের ফাইনালে দেখা হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর, যেখানে শিরোপা ধরে রাখার যুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য ভারতের বিপরীতে প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে নামছে পাকিস্তান।
আট দলের আসরে একের পর এক প্রতিপক্ষকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন রূপে ফাইনালে উঠেছে ভারত। অন্যদিকে, সেমিফাইনালের সমতুল্য ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে পাকিস্তান।
তবে ম্যাচটিকে ঘিরে কেবল ক্রিকেট নয়, বরং দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনও প্রভাব ফেলছে। আগের দুই মোকাবিলায় ভারত জিতলেও ম্যাচ-পরবর্তী করমর্দন এড়িয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা মাঠের বাইরের অস্থিরতাকেও সামনে এনেছে। তবুও পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আঘা স্পষ্ট জানালেন, চাপকে পাশে রেখে কেবল মাঠের খেলা নিয়েই ভাবছেন তারা।
“ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ সবসময় চাপ নিয়ে আসে। শেষ দুটি ম্যাচে আমরা বেশি ভুল করেছি, তাই হেরেছি। এবার সেসব না করলে জেতা সম্ভব,” বলেন সালমান। তিনি আরও যোগ করেন, “বাইরের কথাবার্তা নিয়ে ভাবার কিছু নেই। আমাদের নিয়ন্ত্রণে যা আছে, সেটা হলো মাঠে সেরা ক্রিকেট খেলা।”
অন্যদিকে, ভারত শিবিরে ভরসার নাম ওপেনার অভিষেক শর্মা। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৩০৯ রান করে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব নিয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট। সাথে আছেন বুমরাহ, চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেলের মতো কার্যকর বোলার। তবে ফিল্ডিংয়ে ধরা পড়েছে ঘাটতি—এখন পর্যন্ত ১২টি ক্যাচ ছেড়েছে দলটি।
ভারতের বোলিং কোচ মর্নে মর্কেল বলেন, “আমরা এখনো নিখুঁত দল নই। কিন্তু জিতেছি, অনেক সময় কষ্ট করে হলেও জিতেছি। ফাইনালে সেটা আরও উন্নত করতে চাই।”
পাকিস্তানের জন্য প্রধান ভরসা হবে পেস আক্রমণ। শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফের শুরুতেই আঘাত হানার দিকে তাকিয়ে আছেন দলীয় ম্যানেজমেন্ট। স্পিনে আছেন আবরার আহমেদ ও মোহাম্মদ নবী। তবে ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ম্যাচে ৪৯ রানে পাঁচ উইকেট হারানো উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
তবুও আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তান অধিনায়ক বলেন, “আমরা জানি ব্যাটিং ভালো হয়নি। তবে ফাইনালে সেরাটা খেললে যেকোনো দলকে হারানো সম্ভব।”
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের এ মহারণ তাই শুধু শিরোপার লড়াই নয়, বরং মর্যাদা ও ইতিহাসেরও এক নতুন অধ্যায় রচনা করবে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন অপেক্ষায়—দুবাইয়ে আজকের সন্ধ্যায় কে হবে এশিয়ার সেরা?