Home আইন-আদালত এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলায় ৩৪৭৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলায় ৩৪৭৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সাইফুল আলম মাসুদ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: আলোচিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুদকের চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে মামলা দুটি করা হয়। এই মামলায় সাইফুল আলম ছাড়াও জনতা ব্যাংক ও এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ মোট ৬৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রথম মামলা: ২ হাজার কোটি টাকার চিনি ঋণ আত্মসাৎ

প্রথম মামলায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে জনতা ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৩২ কোটি ৩০ লাখ ৪৫ হাজার ৯১৮ টাকা ৪০ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় সাইফুল আলম মাসুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে, যেখানে তাকে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দেখানো হয়েছে।

দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোভিড প্রণোদনা, এলটিআর লোনসহ বিভিন্ন উপায়ে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে। এই ঋণের অর্থ সুদে-আসলে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এই মামলায় সাইফুল আলম ছাড়াও এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক আব্দুল্লাহ হাসান, সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের এমডি রাশেদুল আলমসহ এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন পরিচালক এবং জনতা ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। মোট ৩৬ জনকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলা: ১ হাজার ১৫২ কোটি টাকার ভোজ্যতেল ঋণ আত্মসাৎ

দ্বিতীয় মামলায় এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের নামে ১ হাজার ১৫২ কোটি ৫১ লাখ ১৪ হাজার ১০৭ টাকা ৫২ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের পরিচালক শাহানা ফেরদৌসকে।

দুদক জানিয়েছে, ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড বিভিন্ন উপায়ে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই বিশাল অঙ্কের অর্থ সুদে-আসলে আত্মসাৎ করেছে।

এই মামলায় শাহানা ফেরদৌস ছাড়াও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসকাত আহমেদসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৯ জনই জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা।

দুদকের বক্তব্য ও অভিযোগের ধারা

দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ গণমাধ্যমকে এই মামলা দুটির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ (বিশ্বাসভঙ্গ), ৪২০ (প্রতারণা), ১০৯ (অপরাধে সহায়তা) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই দুটি মামলা এস আলম গ্রুপের আর্থিক লেনদেন এবং জনতা ব্যাংকের ঋণ বিতরণের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনার জেরে দেশের আর্থিক খাতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com