Home স্বাস্থ্য সুস্থ জীবনের পথে ছয়টি সহজ খাদ্যাভ্যাস

সুস্থ জীবনের পথে ছয়টি সহজ খাদ্যাভ্যাস

ভালো অভ্যাসে বদলে দিন খাবার খাওয়ার ধরন

হেলথ ডেস্ক:

সুস্থ থাকার জন্য আমাদের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তনও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রতিবেদনে জানানো হলো ছয়টি উপযোগী অভ্যাস, যা খাদ্য গ্রহণে সচেতনতা বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং খাদ্য অপচয় কমাতে সাহায্য করতে পারে।

১. এক সপ্তাহের খাদ্য-ডায়েরি রাখুন
খাবারের রেকর্ড রাখা শুধু আত্মসচেতনতা বাড়ায় না, বরং গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। প্রতিটি খাবারের পর আপনি কতটুকু খেলেন তা তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলুন। দিনের শেষে ডায়েরি পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারবেন—আপনার খাদ্য তালিকায় ফল আছে কি না, শাকসবজি কতটুকু খেয়েছেন, মিষ্টিজাত খাবার বেশি হচ্ছে কি না, কিংবা পরিমাণে বেশি খাওয়া হচ্ছে কি না।

২. প্রতিটি খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করুন
শীতকালে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। অথচ প্রতিবার খাবারের আগে এক গ্লাস পানি খেলে পেট কিছুটা ভরাট লাগে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে যায়। পুরুষদের দিনে প্রায় ১৩ কাপ এবং নারীদের ৯ কাপ পানি প্রয়োজন। ব্যায়াম করলে প্রয়োজন আরও বাড়ে।

৩. প্রাতঃরাশে আঁশজাত খাবার বাড়ান
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যথেষ্ট আঁশ না থাকলে হজমের সমস্যা ও পুষ্টিহীনতা দেখা দিতে পারে। পুরুষদের দিনে ৩৮ গ্রাম ও নারীদের ২৫ গ্রাম আঁশ প্রয়োজন। নিচের কিছু উপায়ে সকালের খাবারে আঁশ যোগ করতে পারেন:

  • ২ চা-চামচ চিয়া দানার পুডিং;
  • ১/৪ কাপ ব্রান সিরিয়াল স্মুদি বা ওটমিলে;
  • ২ চা-চামচ ফ্ল্যাক্সসিড বা কুমড়ার বিচি;
  • ১ কাপ রেসবেরি বা ব্ল্যাকবেরি;
  • টোফু স্ক্র্যাম্বল বা কালো ছোলা দেওয়া সবজির ওমলেট;
  • ২–৩ গ্রাম আঁশযুক্ত পূর্ণ শস্যের রুটি;
  • ১/৪টি অ্যাভোকাডো টোস্টে বা স্মুদিতে।

৪. হৃদযত্নে মনোযোগ দিন, ভালো চর্বি বেছে নিন
পলি-আনস্যাচুরেটেড ও মনো-আনস্যাচুরেটেড চর্বি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। বাদাম, বীজজাতীয় খাবার, জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো এসব চর্বির ভালো উৎস। এই চর্বিগুলো দিয়ে:

  • মাখনের পরিবর্তে পিনাট বা বাদাম মাখন ব্যবহার করুন;
  • ডিম ভাজার আগে তেলে দিন জলপাই তেল;
  • চিজ ক্র্যাকার বাদ দিয়ে খান বাদাম ও ফল;
  • স্যান্ডউইচে মাখনের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো বা হামাস ব্যবহার করুন।

৫. বাড়িতে খাবার অপচয় কমান
খাবার অপচয়ের ফলে ল্যান্ডফিলে পচন হয়ে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। পরিকল্পিত বাজার করা, বাঁচিয়ে রাখা খাবার আবার ব্যবহার করা, ও মেয়াদপূর্তির আগেই খাওয়া—এইসব ছোট অভ্যাসই টেকসই জীবনের পথে এগিয়ে দেয়।

৬. ধীরে ধীরে খাবার খান
যারা দ্রুত খায়, তাদের ওজন বেশি হওয়ার আশঙ্কা তিন গুণ বেশি। খাবার খাওয়ার সময় আমাদের মস্তিষ্ককে পূর্ণতার সংকেত পেতে ২০ মিনিট সময় লাগে। দ্রুত খেলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার ঝুঁকি বাড়ে।
সচেতন হতে হলে প্রতিবার চিবিয়ে খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চামচ-চাকু নামিয়ে রাখুন। মাঝে মাঝে এক চুমুক পানি নিন।

সতর্কতা ও সংযমই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার চাবিকাঠি। খাদ্যাভ্যাসে এই ছোট ছোট পরিবর্তন আজ থেকেই শুরু করুন।