Home জাতীয় বরখাস্ত ওসি মোক্তারুজ্জামান ও দুই এসআই, চাঁদাবাজি-লুটপাটে ডিবি পরিচয়

বরখাস্ত ওসি মোক্তারুজ্জামান ও দুই এসআই, চাঁদাবাজি-লুটপাটে ডিবি পরিচয়

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামানসহ দুই এসআইকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, তারা ডিবি পুলিশের পরিচয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে গভীর রাতে একটি বাসায় ঢুকে ভাঙচুর, লুটপাট ও চাঁদাবাজি চালিয়েছেন। ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট আব্দুল ওয়াদুদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি সদর দপ্তর। আপাতত ওসি মোক্তারুজ্জামান, এসআই বেলাল ও এসআই মান্নানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আব্দুল ওয়াদুদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে কলাবাগানের সোনারগাঁ রোডের তার বাসায় হানা দেন ওসি ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। ডিবি পরিচয়ে একদল লোকসহ তারা তৃতীয় তলায় উঠে দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ওয়াদুদকে ঘর থেকে টেনে বের করে পুলিশ সদস্যরা বাসার ভেতরে ছোটাছুটি করতে থাকেন।

ভুক্তভোগীর দাবি, এসআই মান্নান তাকে বলেন—“এক কোটি টাকা দিলে মামলা হবে না।” পরে দর-কষাকষির পর দুই লাখ টাকা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকির জন্য তার বাসায় তিনজন ‘ডিবি পরিচয়ধারী’ লোক পাহারায় রাখা হয়। অভিযানের সময় ওয়াদুদের পোষা মূল্যবান পাখি, কম্পিউটার, সিসিটিভির হার্ডডিস্কসহ বেশ কিছু জিনিস লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনার সময় ওয়াদুদের ম্যানেজার ৯৯৯-এ ফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানা থেকে টহল পুলিশ আসে। তবে কলাবাগান থানার ওসি তাদের ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

ওসি মোক্তারুজ্জামান পরে স্বীকারোক্তিমূলক একটি জবানবন্দি আদায় করে তার ভিডিও ধারণ করেন বলে জানিয়েছেন ওয়াদুদ। তিনি অভিযোগ করেন, “এটি ছিল পুরোপুরি আইনবহির্ভূত একটি অভিযান।”

এছাড়া তিনি জানান, তার বাসার পাশে ২০০৬ সাল থেকে সরকারি অনুমোদনে পরিচালিত একটি মিনি চিড়িয়াখানা রয়েছে। সেখান থেকে দুর্লভ ম্যাকাও, কাকাতুয়া, রেইনবো লরিসসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি পাখি নিয়ে যাওয়া হয়। এসব মালামাল এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিকভাবে বিভাগীয় সংযুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তীতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আব্দুল ওয়াদুদ একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।