বিনিয়োগ ও অর্থনীতিতে বড় সম্ভাবনার দ্বার খুলছে কক্সবাজার বিমানবন্দর
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কক্সবাজার: দ্রুত এগোচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন প্রকল্প। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, চলমান উন্নয়নকাজের ফলে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই আংশিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হবে। এতে দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জন্য উন্মুক্ত হবে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
রবিবার দুপুরে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত দীর্ঘায়িত রানওয়ের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের পরিদর্শনে মনে হয়েছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ রানওয়ে সাগরের বুক জুড়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে, যাতে বোয়িং 777 ও এয়ারবাস A350-এর মতো ওয়াইডবডি উড়োজাহাজ অবতরণ করতে পারে। পাশাপাশি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন দ্বিতীয় টার্মিনাল ভবন, কার্গো হ্যান্ডলিং সুবিধা, ন্যাভিগেশনাল সিস্টেম ও যাত্রীসেবা অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২,৩০০ কোটি টাকা।
এই উন্নয়ন শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দর শুধু পর্যটক পরিবহনেই নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক ট্রানজিট হাব হিসেবেও কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের কারণে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য। সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকদের সহজে আসা সম্ভব হবে। এতে শুধু পর্যটন শিল্প নয়, হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও স্থানীয় সেবাখাতেও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
শুধু পর্যটন নয়, কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত হলে এখানকার সামুদ্রিক খাদ্য, কৃষিপণ্য ও হস্তশিল্পের সরাসরি রপ্তানির পথও খুলবে। বিশেষ করে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এমন সামুদ্রিক মাছ বা কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছাতে সহজ হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বাড়বে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে কক্সবাজার হয়ে উঠতে পারে আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে জিডিপিতে অবদান রাখবে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অর্থনীতি।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।