৭ দফা বিধি-নিষেধ জারি
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কক্সবাজার: ইংরেজি বর্ষবিদায় ও নতুন বছর ২০২৬-কে বরণ করে নিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ঢল নেমেছে লাখো পর্যটকের। এই ‘থার্টি-ফার্স্ট নাইট’ উদযাপনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কক্সবাজার শহর ও সৈকত এলাকায় কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে জেলা পুলিশ।
জেলা পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই পুরো জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে বিশেষ তল্লাশি চৌকি (চেকপোস্ট)। এছাড়া মাঠে সক্রিয় রয়েছে: ৭টি বিশেষ টহল টিম, ২টি মোবাইল টিম। এবং ৪টি মোটরসাইকেল স্কোয়াড।
শহরের প্রবেশপথগুলোতে দূরপাল্লার বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে নিবিড় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) দেবদূত মজুমদার জানান, কেউ যেন নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর সামগ্রী নিয়ে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ সাতটি সুনির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে:
- আতশবাজি ও ফানুস নিষিদ্ধ: সৈকত ও শহর এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
- উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা: রাস্তা বা খোলা জায়গায় কোনো ধরনের কনসার্ট, নাচ বা গানের আয়োজন করা যাবে না।
- বার বন্ধ: ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সব মদের দোকান ও বার বন্ধ থাকবে।
- গুজব প্রতিরোধ: সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো ধরনের উস্কানিমূলক বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারী পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- বেপরোয়া ড্রাইভিং: উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, জয় রাইড বা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
- নারী নিরাপত্তা: নারী পর্যটকদের উত্ত্যক্ত করা বা ইভ-টিজিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
- হোটেল কর্তৃপক্ষকে সতর্কতা: ইনডোর প্রোগ্রামের তথ্য এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসবি-কে অবহিত করতে হবে।
সড়কপথে পর্যটকদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালুমঘাট ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ওসি মেহেদী হাসান সুমন।
অন্যদিকে, টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ পর্যটকদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, “সৈকত ও হোটেল-মোটেল জোনে আমাদের সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার হলে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানানোর অনুরোধ রইল।”
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আসা পর্যটকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন জেলা প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য। পুলিশের এই কঠোর অবস্থানের ফলে সাধারণ পর্যটকদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।










