Home Second Lead কড়ইবাড়ি হত্যাকাণ্ড : ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জন আসামি

কড়ইবাড়ি হত্যাকাণ্ড : ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জন আসামি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কুমিল্লা: মুরাদনগরের কড়ইবাড়িতে এক মর্মান্তিক গণপিটুনিতে একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন রোকসানা আক্তার রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল (৩৫) এবং মেয়ে তাসপিয়া (২৯)। ঘটনাটি ঘটে ৩ জুলাই সকালে মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামে।

রোকসানা আক্তার রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার শুক্রবার রাতে বাঙ্গরাবাজার থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে আকাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, একটি মোবাইল ফোন চুরির গুজবকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।

৩ হত্যার ঘটনায় আটক দুজন

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন মো. সবির আহমেদ (৪৮) ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুল (৫৬)। আটক ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বাঙ্গরাবাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান।

নিহতদের পরিবারের দাবি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের উপস্থিতিতে ২ জুলাই রাতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পরদিন সকালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এরপর ভোরবেলা বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে এনে তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন নিহতদের আরেক মেয়ে রুমা আক্তার, যিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সকাল ৯টার দিকে শতাধিক মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে বাড়িতে হানা দেয়। প্রথমে রাসেলকে ধরে বাইরে নিয়ে মারধর করে, পরে তাঁর মা ও বোনকেও পিটিয়ে ফেলা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তারা প্রাণ হারান।

ঘটনার জেরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, গুজবের ভিত্তিতে নিরীহ মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় সারা দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে।