Home আন্তর্জাতিক ভূমিকম্প আতঙ্কের সুযোগ : করাচির জেল ফাঁকা করে পালাল ২ শতাধিক বন্দি

ভূমিকম্প আতঙ্কের সুযোগ : করাচির জেল ফাঁকা করে পালাল ২ শতাধিক বন্দি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভূমিকম্পের আতঙ্কে যখন করাচির মালির জেলজুড়ে হুলুস্থুল পরিস্থিতি, ঠিক সেই সময়ই ঘটে গেল পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় কারাগার পালানোর ঘটনা। সোমবার রাতে এই ঘটনায় চমকে গিয়েছে গোটা দেশ। কয়েদিদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের ব্যারাক থেকে বের করে মূল প্রাঙ্গণে আনা হয়েছিল, অথচ সেই মানবিক সিদ্ধান্তটাই কাল হয়ে দাঁড়াল জেল কর্তৃপক্ষের জন্য।

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের পুলিশ প্রধান গুলাম নবি মেমন জানান, ভূমিকম্পের পরপরই রাত প্রায় ১২টা ৪৫ মিনিটে প্রায় ২০০০ কয়েদিকে বের করা হয় গুনতির জন্য। সেই সময়ই সুযোগ নিয়ে হামলা চালায় মাদকাসক্ত কয়েদিদের একটি দল। জেলে ছড়িয়ে পড়ে গুজব, আতঙ্ক আর উত্তেজনা। মুহূর্তেই তা রূপ নেয় হিংসাত্মক বিশৃঙ্খলায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, প্রথমে দরজা ভাঙার চেষ্টা, তারপর রক্ষীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া, এরপর শুরু হয় গুলি চালনা। জেলরক্ষীরা পালটা ফাঁকা গুলি চালালেও আটকাতে পারেননি সবাইকে। এক কয়েদি গুলিতে নিহত হন, আহত হন অন্তত চার কয়েদি এবং দুই নিরাপত্তাকর্মী।

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ২১৬ কয়েদি পালিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে ৭৮ জনকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এক বন্দিকে নিজের মায়ের হাতে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার ঘটনাও উঠে এসেছে। বাকি ১৩৮ জনকে ধরতে গঠন করা হয়েছে একাধিক বিশেষ পুলিশ দল।

সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ প্রশাসনিক ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, “ভূমিকম্প হোক বা অন্য কিছু, সন্ধ্যার পর এত কয়েদিকে বাইরে আনার সিদ্ধান্ত একেবারেই ভুল ছিল। এদের মধ্যে অনেকেই বড় অপরাধে যুক্ত না হলেও, এমন কাণ্ড তাদের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর মামলা এনে দিতে পারে।”

জানা গিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের অনেকেই মাদক, চুরি ও হালকা অপরাধে জেল খাটছিল। তবে এদের মধ্যে কেউই সন্ত্রাসবাদী বা বিদেশি নাগরিক নয় বলে নিশ্চিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিন্ধু পুলিশের শীর্ষ কর্তা থেকে শুরু করে প্রিজন ডিপার্টমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তদন্তে নেমেছেন। জেল ভেঙে পালানোর এই ঘটনায় কারা দায়ী, কী ধরনের প্রশাসনিক ভুল হয়েছিল, সেটাই এখন জানার অপেক্ষায় গোটা দেশ।