Home বিনোদন ২০ বছরের নায়কের সঙ্গে প্রেম: করিনার সাহসী ভূতের গল্প

২০ বছরের নায়কের সঙ্গে প্রেম: করিনার সাহসী ভূতের গল্প

করিনা কপূর খান। ছবি সংগৃহীত

হাঁটুর বয়সি নায়কের সঙ্গে প্রেমে জড়াতে চলেছেন ‘বেবো’

বিনোদন ডেস্ক: বয়স কি শুধুই একটি সংখ্যা? নাকি তা সমাজের চোখে এক অলিখিত নিয়মের বেড়াজাল? বলিউডে এই প্রশ্ন নতুন নয়। তবে করিনা কপূর খানের নতুন চরিত্র যেন সেই প্রশ্নকে আরও জোরালোভাবে সামনে আনছে।

৪৪ বছর বয়সী করিনা কপূর খান এবার অভিনয় করতে চলেছেন এক ব্যতিক্রমী চরিত্রে ভূতের। তবে এই ভূত চরিত্র শুধু ভয় বা প্রতিশোধে আবদ্ধ নয়, বরং প্রেম, আকাঙ্ক্ষা ও আত্মিক টানাপোড়েনও তার গভীরে কাজ করবে। এবং সবচেয়ে বড় চমক—এই ভূতের প্রেমিক একজন মাত্র ২০ বছর বয়সী তরুণ।

এক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছবিতে থাকবে সাহসী দৃশ্য, মানসিক দ্বন্দ্ব, এবং এমন এক প্রেমকাহিনি যা বয়স, মৃত্যু আর বেঁচে থাকার অর্থ নিয়ে দর্শককে ভাবাবে। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন হুসেইন দলাল, যিনি এর আগে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ছবির সহলেখক হিসেবেও কাজ করেছেন। যদিও নির্মাতা পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

বলিউডে বয়স নিয়ে বৈষম্য?

পুরুষ তারকাদের ক্ষেত্রে বয়সজনিত ‘জুটি মেকিং’ যেন বলিউডে খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ৫০ ছুঁই ছুঁই নায়কদের সঙ্গে ২০-এর কোঠার নায়িকারা জুটি বেঁধেছেন পর পর ছবিতে এবং তা নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম সমালোচনা হয়েছে। যেমন ‘সিকন্দর’ ছবিতে সলমন খানের বিপরীতে রশ্মিকা মন্দানা, বা ‘সিতারে জমিন পর’-এ আমির খানের সঙ্গে জেনেলিয়া দেশমুখ। রণবীর কাপুরের সাম্প্রতিক ছবি ‘ধুরন্ধর’-এ তাঁর বিপরীতে দেখা গিয়েছে মাত্র ১৮ বছরের সারা অর্জুনকে।

কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে এই বয়সভেদ যেন বরাবরই চক্ষুশূল! নারী তারকাদের বয়স বাড়লেই তাঁদের অভিনয়ের সুযোগ কমে আসে, মুখ্য চরিত্রে দেখা যায় না—এমন বহু অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। করিনার এই ছবিকে অনেকে সেই ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’-এর বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ হিসেবেও দেখছেন।

করিনার অবস্থান: “ভালো গল্পই মুখ্য”

করিনা কপূর বরাবরই সাহসী। চরিত্র নির্বাচনে, ব্যক্তিজীবনে, সমাজের প্রচলিত নিয়ম ভেঙে নিজস্ব পথে হাঁটার ক্ষেত্রেও তিনি অনন্য। বয়স নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘আমি চরিত্র দেখি, গল্প দেখি। বয়স কোনও বাধা নয়। এমন চরিত্রে আগে কখনও অভিনয় করিনি।’’

এই ভৌতিক ছবিতে বয়স, প্রেম, আকাঙ্ক্ষা, আত্মিক সংযোগ—সবকিছু মিলিয়ে একধরনের নতুন চলচ্চিত্রভাষার চর্চা হতে পারে। এটি কেবল সাহসী রোমান্স নয়, বরং আত্মপরিচয় ও সমাজদৃষ্টিরও এক প্রতিচ্ছবি হতে চলেছে।

নারীর চোখে বয়স ও প্রেম

বয়সের ব্যবধান নিয়ে প্রেমের গল্পে নারী যখন নেতৃত্বে থাকেন, তখন তা শুধু বিনোদন নয়, সামাজিক বাস্তবতাকেও প্রশ্ন করে। করিনার এই ছবিটি যদি ঠিকঠাক নির্মিত হয়, তবে তা হতে পারে নারীর বয়ঃসন্ধিক্ষণের অভিজ্ঞতা ও আকাঙ্ক্ষার এক নতুন ব্যাখ্যা। সিনেমার মাধ্যমে নারীর ইচ্ছা, ভালোবাসা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জায়গা তৈরি হতে পারে।

শেষ কথা

করিনার এই ‘ভূত প্রেম’ হয়তো এক নতুন ঘরানার পথ দেখাবে বলিউডকে। হয়তো সমাজের চোখে ধুলো দিয়ে নারীপ্রধান সাহসী গল্প বলবে, যেখানে বয়স নয়, মানুষের অনুভূতিই আসল হয়ে উঠবে। এখন শুধু অপেক্ষা—এই ছবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার।