আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নয়া দিল্লি: ভারতের করোনা সংক্রমণ গত দশ দিনে ব্যাপক বেড়ে গেছে। সরকারিভাবে পাওয়া তথ্য সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন এবং দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতাসম্পন্ন ভ্যারিয়েন্টগুলোই এই সংক্রমণের বাড়াবাড়ির প্রধান কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মাসে হংকং, সিঙ্গাপুর, চীন ও থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা গেছে। এই নতুন করোনা সংক্রমণ জেএন.১ নামে একটি অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত। ২০২৩ সালের শেষদিকে এই ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় এবং ২০২৪ সালের শুরু পর্যন্ত দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এটি অনেক দেশে প্রধানত সংক্রমণকারী ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রবিবার দেশের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৩৯৫ জন, যা মে ২২ তারিখের ২৫৭ জনের তুলনায় বহুগুণ ।
মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে জানিয়েছে, দেশে জেএন.১-এর দুটি সাবভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে – এলএফ.৭ এবং এনবি.১.৮.১। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত ছড়ায়, তবে মূলত হালকা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে ফুসফুস ও শ্বাসনালী বিশেষজ্ঞ ডঃ নিখিল মোদির মন্তব্য, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ সিজনাল ফ্লুর মতোই হালকা, হাসপাতালে ভর্তি বা জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা কম। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো ফ্লু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তা এই ক্ষেত্রেও হচ্ছে।”
গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি, কেরালা, কর্ণাটক ও উত্তরপ্রদেশে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ডঃ মোদি জানিয়েছেন, “মৃতদের অধিকাংশই গুরুতর রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কোথাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় তীব্র করোনা রোগের খবর পাওয়া যায়নি।”
ভারত ২০২১ সালের মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। সেই সময়ে দৈনিক সংক্রমণ ছিল চার লক্ষের ওপর। দেশের অনেক হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। অক্সিজেন, বিছানা ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে, ভারতের করোনা-সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৪.৭ মিলিয়ন বলে ধারণা করা হয়।
ডঃ মোদি বলেন, “২০২১ সালের পরিস্থিতি স্মরণ করলে আতঙ্ক হওয়া স্বাভাবিক, তবে এখনকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে না, তাই পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব। সব হাসপাতালেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
