বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, যশোর: মাত্র এক দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১৭০ টাকা বেড়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) যশোর শহরের বড় বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে এখন মানভেদে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। গতকালও এর দাম ছিল ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে মরিচের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এখন মরিচের ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’, ফলে সাময়িকভাবে দাম বেড়েছে।
কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী রানা গাজী জানান, বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ একেবারেই কমে গেছে। পাইকারি বাজারেই মানভেদে কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করেন, আমদানি (এলসি) না এলে দাম আরও বাড়তে পারে, এমনকি তা হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আরেক ব্যবসায়ী দিপু বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে, তবে ক্ষেতের ক্ষতি আরও বাড়বে এবং দামও লাগামহীন হয়ে পড়বে। যশোরের বাজার এখন পুরোপুরি আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে, কারণ স্থানীয় উৎপাদন প্রায় শেষের পথে।
অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বাজারে আসা গৃহিণী নাসরিন বেগম বলেন, “একদিনে দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল কীভাবে? ৪০০ টাকা দিয়ে মরিচ কেনা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। মনে হচ্ছে বাজারে এখন আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।”
আরেক গৃহিণী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সবজির দাম এমনিতেই বেশি। তার ওপর মরিচের এই দাম আমাদের সংসার চালানোই কঠিন করে তুলেছে। সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
বাজার তদারকি কমিটির সদস্য ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, “দামবৃদ্ধির বিষয়টি আমরা নজরে এনেছি। মৌসুমি কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে ঠিকই, তবে কেউ যদি অবৈধ মজুতের মাধ্যমে বাজার অস্থির করার চেষ্টা করে, আমরা ব্যবস্থা নেব।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, “জেলায় ৬৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টিতে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। মরিচের ট্রানজিশন সময় চলায় দাম কিছুটা বেড়েছে। নতুন মরিচ বাজারে আসতে ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে। তখন দাম দ্রুত কমে আসবে।”
