বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আহসান খলিল পদত্যাগ করেছেন। রোববার, ২৭ জুলাই, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বরাবর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। একই সঙ্গে পদত্যাগপত্রের একটি অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকেও পাঠানো হয়েছে বলে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে তিন বছরের জন্য মেঘনা ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ পান খলিল। তবে পূর্ণ মেয়াদের এক বছরেরও কম সময়—মাত্র ১৫ মাস দায়িত্ব পালন করে আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করলেন তিনি। তার এ পদত্যাগ ঘিরে ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাতে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা, ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা, আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সম্পর্কসহ একাধিক বিষয়ে মতবিরোধ থাকতেই পারে, যার ফলে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে কাজী আহসান খলিল বলেন, ‘নতুন পর্ষদ কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে আমাকে ছুটিতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। আমি সেই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে নিজেই পদত্যাগ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করলেই আরও অনেক কিছু জানতে পারবে।’
৩৫ বছরের কর্মজীবনে কাজী আহসান খলিল প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকে কাজ করেছেন। তিনি মেঘনা ব্যাংকে যোগদানের আগে এনআরবি ব্যাংকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
চলতি বছরের মার্চে মেঘনা ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ারধারী পরিচালকের পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। যাদের দুজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা।
ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, কাজী আহসান খলিল দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে কর্পোরেট ব্যাংকিং ও ডিজিটাল সেবা বিস্তারের দিকে। তবে পর্ষদ বা নিয়ন্ত্রক দিক থেকে এসব উদ্যোগে প্রত্যাশিত সমর্থন পাননি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, তার পদত্যাগের পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি মেঘনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নতুন এমডি নিয়োগের বিষয়ে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
ব্যাংকিং বিশ্লেষকরা বলছেন, বারবার এমডি পরিবর্তন বা দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ একটি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মেঘনা ব্যাংকের সাম্প্রতিক আর্থিক অবস্থা, খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও গ্রাহক আস্থার দিকগুলো সামনে রেখে এ পরিবর্তনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও।
আরও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ জানতে চোখ রাখুন www.businesstoday24.com ওয়েবসাইটে।