আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সরকার কর্তৃক ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব ও এক্সসহ ২৬টি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ৩৪৭ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ব্যারিকেড, সংঘর্ষ ও রক্তপাত
পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর সামনে প্রথমে কেবল কয়েকজন পুলিশকর্মী দায়িত্বে থাকলেও পরে আরও পুলিশ মোতায়েন হলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তাল হয় রাজধানী। পুলিশ শূন্যে গুলি ও রবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ সরাসরি লক্ষ্য করে গুলি করেছে। কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, ২৫০ জনের বেশি আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ নিয়ে চাপ
বিক্ষোভের নিশানায় পড়েছে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পৈতৃক বাড়ি। দামাক এলাকায় ওলির বাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা ইট, পাথর ছুঁড়েছেন। বিরোধী দল রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি) প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের দাবি তুলেছে এবং ঘটনার তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেহাখ সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রতিবাদের বিস্তার ও রাস্তা অবরোধ
কেবল রাজধানীতেই নয়, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পোখরা, ইটাহারি ও ভরতপুরসহ দেশের অন্যান্য শহরে। প্রতিবাদকারীরা নেপাল পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়ক অবরোধ করেছে, টায়ারে আগুন ধরিয়ে যান চলাচল বন্ধ রেখেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাফ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
সরকার এই পদক্ষেপকে “জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা” হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এটিকে বাক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ হিসেবে দেখছে। জাতিসংঘও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা
ছাত্র ও যুবরা স্কুল ও কলেজের ইউনিফর্মে অংশ নিয়েছেন এবং “দুর্নীতি বন্ধ করো, সামাজিক মাধ্যম নয়” ও “যুব সমাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে”—এমন স্লোগান তুলে প্রতিবাদ করেছেন। তাদের দাবী সামাজিক মাধ্যম পুনরায় চালু করা এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।