Home Third Lead সিলেটের আকাশে রপ্তানির নতুন দুয়ার: ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট

সিলেটের আকাশে রপ্তানির নতুন দুয়ার: ওসমানী থেকে কার্গো ফ্লাইট

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটবাসীর জন্য সুখবর! প্রথমবারের মতো সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু হচ্ছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ৬০ টন তৈরি পোশাক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের কার্গো ফ্লাইট স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা করবে।

এ বিশেষ ফ্লাইটের উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং বিমান সচিব নাসরীন জাহান। ফ্লাইটের সম্মানে ওসমানী বিমানবন্দরে দেওয়া হবে জল কামান স্যালুটও।

বিমানবন্দর পরিচালক হাফিজ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন কার্গো কমপ্লেক্স ও টার্মিনাল থেকে আজ এই ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। সুরক্ষা ব্যবস্থাসহ কার্গো পরিচালনার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবির ভূঁইয়া বলেন, ঢাকার পর সিলেট বাংলাদেশের দ্বিতীয় কার্গো পরিচালনাকারী বিমানবন্দর হিসেবে যুক্ত হচ্ছে। এতে সিলেট অঞ্চলের ব্যবসায়ী সমাজ তাদের নিজস্ব পণ্য সরাসরি বিশ্ববাজারে পাঠাতে পারবেন, সময় ও ব্যয় দুই-ই সাশ্রয় হবে।

তিনি আরও জানান, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের (আইকাও) মানদণ্ড অনুযায়ী ক্যাটাগরি-১ মর্যাদা পেয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন সহজ ও নিরাপদ হবে।

প্রথম কার্গো ফ্লাইটটি গ্যালিস্টেয়ার এভিয়েশনের মাধ্যমে পরিচালিত একটি চার্টার্ড এয়ারবাস A330-300 বিমান। এই ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সেবার মান উন্নয়নে কার্গো চার্জ কমানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।

এদিকে, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও শিগগিরই কার্গো ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যা দেশের তৃতীয় কার্গো সুবিধাপ্রাপ্ত বিমানবন্দর হবে।

এছাড়া, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহুল প্রতীক্ষিত তৃতীয় টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষের পথে। চালু হলে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা বছরে ২ লাখ টন থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৫ লাখ ৪৬ হাজার টনে। এতে আঞ্চলিক ট্রানজিটের উপর নির্ভরতা কমবে এবং বাংলাদেশের নিজস্ব রপ্তানি চ্যানেল শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবার সিলেট থেকে বিশ্ববাজারের পথে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য দ্রুত এবং কম খরচে পাঠানোর সুযোগ তৈরি হলো। সিলেটের রপ্তানি ইতিহাসে আজকের দিনটি তাই নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় মাইলফলক হয়ে থাকবে।