আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের জনপ্রিয় স্যাটায়ার ম্যাগাজিন লেমান-এ প্রকাশিত একটি ব্যঙ্গচিত্রকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোয়ান একে “ঘৃণ্য উসকানি” আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানান।
টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমাদের পবিত্র মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে আমরা তা মেনে নেব না। যারা নবী ও অন্য পয়গম্বরদের অবমাননা করে, তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”
পুলিশ ইতোমধ্যে লেমান পত্রিকার চারজন কার্টুনিস্টকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন কার্টুনিস্ট ডি.পি. পেহলেভান, যাকে হাতকড়া পরিয়ে জোর করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে তুলতে দেখা গেছে—সেই ভিডিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, “এই ঘৃণ্য চিত্রের আঁকিয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ধরনের নির্লজ্জদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।”
সরকার জানিয়েছে, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে ফৌজদারি দণ্ডবিধির একটি ধারায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে ধর্মীয় রক্ষণশীল ও শাসকদল একে “ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণাজনিত অপরাধ” বলে অভিহিত করেছে। যদিও লেমান পত্রিকা এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, ছবিটি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং যারা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের কাছে তারা দুঃখিত।
তবে উত্তেজনা তাতে প্রশমিত হয়নি। মঙ্গলবার ইস্তানবুলে টাকসিম স্কয়ার ও ব্যস্ত ইস্তিকলাল সড়ক ঘিরে নেয় পুলিশ। “ইসলামিক সলিডারিটি প্ল্যাটফর্ম” নামের একটি সংগঠনের ডাকে প্রায় ৩০০ জন প্রতিবাদে অংশ নেয়। তাদের স্লোগান ছিল ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে। যদিও আগের রাতের তুলনায় পরিস্থিতি শান্ত ছিল, যখন প্রায় ৪০০ জন বিক্ষোভকারী লেমান ম্যাগাজিনের কর্মীদের যাতায়াতকারী একটি বারে হামলার চেষ্টা চালায়।
তুরস্কের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি শুধু ধর্মীয় আবেগের নয়—এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইন প্রয়োগ ও রাষ্ট্রীয় কঠোরতার দ্বন্দ্বও উঠে এসেছে। পরিস্থিতি কী মোড় নেয়, সে দিকেই এখন নজর আন্তর্জাতিক মহলের।