Home আন্তর্জাতিক কাশিবুগগা মন্দিরে পদদলিত হয়ে ৯ জন নিহত

কাশিবুগগা মন্দিরে পদদলিত হয়ে ৯ জন নিহত

কাশিবুগগা (অন্ধ্র প্রদেশ): ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশের স্রীকাকুলম জেলার কাশিবুগগা এলাকায় ভয়াবহ পদদলনের ঘটনায় অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ৮ জন নারী ও একজন কিশোর রয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত আরও ২০ জন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভক্তদের দাবি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সকালে মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন। হঠাৎ করেই একদিকের রেলিং ভেঙে পড়লে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, শুরু হয় হুড়োহুড়ি। মুহূর্তের মধ্যেই অনেকে পদদলিত হয়ে আহত হন। পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।

অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু গভীর শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ত্রুটি কীভাবে ঘটল তা তদন্ত করা হবে।” তিনি নিহতদের পরিবারপ্রতি দুই লাখ রুপি ও আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। একইসঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) শোকবার্তা প্রকাশ করে বলেছেন, “অন্ধ্র প্রদেশের মন্দির দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, কাশিবুগগা মন্দিরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হওয়ায় জনসমাগমের অনুমতি ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যাপ্ত ছিল না। মন্দির প্রাঙ্গণের ধারণক্ষমতা যেখানে সর্বাধিক ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষের, সেখানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকগুণ বেশি ভক্ত। এই অব্যবস্থাপনা নিয়েই এখন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা ভারতের ধর্মীয় পর্যটন ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকেও সামনে নিয়ে এসেছে। প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ দেশজুড়ে মন্দির, ধর্মীয় উৎসব ও মেলায় অংশ নিতে যান, কিন্তু জননিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি থেকে যায় বহু জায়গায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসবের আগে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করা জরুরি।

এই মর্মান্তিক ঘটনার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অন্ধ্র প্রদেশ সরকার জানিয়েছে, মৃতদের পরিবারকে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সেজন্য কঠোর নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।