Home দিল্লি যোগীরাজ্যে ৭ বছরের ছাত্রীকে হোটেলে যাওয়ার কুপ্রস্তাব শিক্ষকের, তারপর….

যোগীরাজ্যে ৭ বছরের ছাত্রীকে হোটেলে যাওয়ার কুপ্রস্তাব শিক্ষকের, তারপর….

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের পারিক্ষিতগড়ে এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে এক ৭ বছর বয়সী ছাত্রীকে ক্লাসের মধ্যেই হোটেলে নিয়ে যাওয়ার কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নাবালিকা ছাত্রী শিক্ষকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পরিবারের কাছে ঘটনাটি খুলে বলার পর পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনাকে ঘিরে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩শে আগস্ট ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক অনুরাগ ওই খুদে ছাত্রীকে তার কাছে ডেকে নেয়। এরপর সকলের সামনেই অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে তাকে প্রশ্ন করে, “আমার সঙ্গে ওয়ো হোটেলে যাবি?” হতচকিত হয়েও সাহসিকতার সঙ্গে ওই ছাত্রী শিক্ষকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর শিক্ষক তাকে ক্লাসের মধ্যেই হুমকি দেয় বলে অভিযোগ।

ভয় পেয়ে প্রথমে স্কুলের প্রিন্সিপালকে বিষয়টি জানায় নাবালিকাটি। পরে বাড়ি ফিরে সে তার পরিবারকে গোটা ঘটনাটি খুলে বলে। এরপরই ছাত্রীর পরিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অনুরাগকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে পকসো ধারায় এবং নাবালিকা ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব ও হুমকির অভিযোগে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ আধিকারিক শিব প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, “থানায় এসে নাবালিকা ছাত্রী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। আমরা দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি এবং তদন্ত চলছে।”

এদিকে, এই ঘটনার পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষক অনুরাগের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। তাকে দুই মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।

শিক্ষকদের দ্বারা হেনস্থার পূর্ববর্তী ঘটনা: প্রসঙ্গত, এর আগেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষকদের দ্বারা ছাত্রীদের হেনস্থার একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।

হিমাচল প্রদেশ (সিরমুর): সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশের সিরমুরের একটি সরকারি স্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির প্রায় ২৪ জন ছাত্রী (যাদের বয়স ১৫ বছরের কম) প্রিন্সিপালের কাছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেয়। ছাত্রীরা অভিযোগ করে যে, ওই শিক্ষক পড়া বোঝানোর অজুহাতে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করতেন, গায়ে হাত দিতেন এবং ফাঁকা ক্লাসরুমে যৌন হেনস্থাও করতেন। বাইরে ফাঁস করলে আরও অত্যাচারের হুমকি দিতেন তিনি। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানালে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৫ নম্বর ধারা এবং পকসো-তে মামলা রুজু করা হয়।

বিহার (মধুবনী): বিহারের মধুবনী জেলার জয়নগর এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারের মধ্যে এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক রাকেশ যাদবকে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। তদন্তে নেমে পুলিশ রাকেশ ছাড়াও কোচিং সেন্টারের বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিং, সোনু চৌধুরী এবং ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া যুবকের বিরুদ্ধেও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর বয়ান অনুযায়ী, বাড়িওয়ালা কুলদীপ সিংয়ের চাপ ও ২০ লক্ষ টাকা চাওয়ার হুমকির কারণে সে নিজেই শিক্ষকের হেনস্থার ভিডিওটি রেকর্ড করতে বাধ্য হয়েছিল। ছাত্রী আরও অভিযোগ করে যে কুলদীপ সিংও তার সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করত।

এইসব ঘটনা সমাজে শিক্ষকদের পবিত্র পেশার ওপর এক কালো ছায়া ফেলেছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের সুরক্ষার প্রশ্নকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।