দ্রুত টাইপিং গতি ও নির্ভুলতা এক সময় এই পেশার প্রধান যোগ্যতা হলেও এখন এসবের প্রয়োজনীয়তা কমে আসছে। কারণ, আধুনিক সফটওয়্যার ও এআই নির্ভর প্রযুক্তি এখন এমনকি হাতের লেখা স্ক্যান করে নিজে থেকেই তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, প্রকল্পভিত্তিক সংস্থা কিংবা হাসপাতালের রেজিস্ট্রার বিভাগে যারা ডেটা এন্ট্রির কাজ করেন, তাদের অনেকেই আগামীতে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন।
বিশ্বব্যাপী ডেটা প্রক্রিয়াজাতকরণে এখন ব্যবহার হচ্ছে RPA (Robotic Process Automation), OCR (Optical Character Recognition) ও AI-based Form Processing। বাংলাদেশের কিছু বেসরকারি ব্যাংক ও বহুজাতিক সংস্থাও এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করেন, “একটি কাগজের ফর্ম স্ক্যান করে সফটওয়্যারই এখন সেটির সব তথ্য ডাটাবেইসে ইনপুট দিতে পারে। এমনকি কোথাও ভুল থাকলে তা নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী সংশোধন করেও ফেলছে।” তিনি বলেন, “যেখানে আগে একজন কর্মীকে দিনে ৩০০ ফর্ম টাইপ করতে হতো, সেখানে এখন একটি সফটওয়্যার দিনে ১০ হাজার ফর্ম প্রক্রিয়াজাত করতে সক্ষম।”
এ অবস্থায় যেসব তরুণ-তরুণী এখনো ডেটা এন্ট্রি পেশায় নিয়োজিত, তাদের জন্য সময় এসেছে নতুন করে নিজেদের গড়ে তোলার।
পুনর্গঠনের পথ কী হতে পারে?
ডেটা এন্ট্রিতে অভ্যস্ত কেউ চাইলে Excel-এর উন্নত ব্যবহার (Pivot Table, Macros) কিংবা Google Sheet Automation শিখে পরিণত হতে পারেন ডেটা অ্যানালিটিক্স সহকারীতে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে এখন ডেটা ক্লিনিং বা ফরমেটিংয়ের কাজের চাহিদাও বাড়ছে।
বাংলাদেশ সরকারের LICT প্রকল্প, মুক্তপাঠ, কিংবা ইউডেমি বা কৌরসেরার মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও এসব বিষয়ে সহজে প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়।
তাছাড়া যারা এখনো ডেটা এন্ট্রিতে কর্মরত, তারা চাইলে নিজেদের দক্ষতা প্রসারিত করে অফিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, অপারেশন সহকারী কিংবা আইটি সহকারী পদেও এগিয়ে যেতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে ঠিকই, তবে নতুন কাজের ক্ষেত্রও তৈরি করছে। যাঁরা সময়মতো নিজেদের পরিবর্তন করতে পারবেন, তাঁরাই টিকে যাবেন এই প্রতিযোগিতার বাজারে।