Home Third Lead বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ৭% চাকরি খেয়ে নেবে এআই!

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ৭% চাকরি খেয়ে নেবে এআই!

বিশ্ব ব্যাঙ্কের সতর্কবার্তা

আইটি ডেস্ক:  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রভাব আগামী দিনে বিশ্বজুড়ে চাকরির বাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে বিভিন্ন সংস্থা। এবার সেই সতর্কবার্তা এসেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে। তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ছ’টি দেশে এআই প্রযুক্তি প্রায় সাত শতাংশ চাকরি কমিয়ে দিতে পারে।

দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রবেশের পর থেকে শ্রমবাজারে অচেনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণ, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, জরুরি মেল তৈরি করা বা প্রেজেন্টেশন প্রস্তুত করার মতো কাজ এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনায়াসে করতে পারছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এই প্রযুক্তির বিস্তার ভবিষ্যতে অফিসের কাজ, বিশেষ করে ‘হোয়াইট কলার’ চাকরির ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট, জবস, এআই অ্যান্ড ট্রেড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা—এই ছ’টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মধ্যম পর্যায়ের শিক্ষিত এবং তরুণ কর্মীরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির কারণে বিশ্বের উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে প্রায় ১৫ শতাংশ চাকরিই হুমকির মুখে পড়তে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উচ্চ আয়ের এবং দক্ষতাসম্পন্ন চাকরির ক্ষেত্রে এআই-এর প্রভাব বেশি। তুলনামূলকভাবে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীরা কিছুটা নিরাপদে থাকলেও, অভিজ্ঞদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা কম। বরং নবীন কর্মীদের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।

গণিতবিদ অ্যালান ট্যুরিং-এর ১৯৫০ সালের গবেষণাপত্র ‘কম্পিউটিং মেশিনারি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স’ থেকে এআই-এর ধারণার সূচনা। তৎকালীন গবেষণাপত্রের প্রশ্ন ছিল, “ক্যান মেশিন থিঙ্ক?” অর্থাৎ, মেশিন কি চিন্তা করতে পারে? বর্তমান বিশেষজ্ঞদের মতে, যদিও এআই চমকপ্রদ দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে, মানুষের নিউরাল নেটওয়ার্কের মতো জটিল ও সৃজনশীল ক্ষমতা তার নেই। ফলে, চাকরির বাজারে পুরোপুরি সঙ্কোচনের আশঙ্কা অতিমূল্যায়িত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শ্রমবাজারে পরিবর্তন আনবে, তবে মানুষের অভিজ্ঞতা, সৃজনশীলতা এবং বুদ্ধিমত্তাকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। তাই চাকরি হারানোর আশঙ্কা থাকলেও তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবসম্মত নয়।