Home কৃষি পানিতে তলিয়ে গেল ভাঙ্গুড়ার কৃষকের স্বপ্ন

পানিতে তলিয়ে গেল ভাঙ্গুড়ার কৃষকের স্বপ্ন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ভাঙ্গুড়া ( পাবনা ): পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার পাকা ইরি ধান আকস্মিক বর্ষণ ও ঢালের পানিতে ডুবে গিয়ে কৃষকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নে বড় ধরনের আঘাত হেনেছে। স্থানীয় কৃষকদের ভাষায়, ধান কাটার আগেই জমিগুলোতে পানি উঠায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া সদর, নৌবাড়িয়া, অষ্টমনিষার বাঁশবাড়িয়া, ডেঙ্গারপাড়া, গদাইরুপসী, দিলপাশারের মাগুড়া, চকলক্ষ্মীকোল, তাড়াপুর, আদাবাড়িয়া, বাশুড়িয়া, পাটুল এবং খানমরিচ ইউনিয়নের শ্রীপুর, জয়রামপুর, রামানাথপুর, দুধবাড়িয়া, হেলেঞ্চা, পুকুরপাড়, সাতবাড়িয়া ও কয়ড়া এলাকার মাঠে দুই শতাধিক হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

খানমরিচ ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক ও তিনটি স্কিমের মালিক আলহাজ্ব সোহরাব হোসেন বলেন, “হঠাৎ বর্ষণ আর ঢালের পানিতে আমার নিজের ও স্কিমের আওতাধীন প্রায় ২০০ একর জমির পাকা ধান ডুবে গেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু জমিতে ধান পাকেও গেছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারিনি।”

এই সংকটে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার হোসেন খান মিঠু বলেন, “আমার ইউনিয়নের ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের মাঠে শতাধিক একর জমি প্লাবিত হয়েছে। কামলার সংকট ভয়াবহ। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ধান কাটার জন্য কৃষকদের মধ্যে পলিথিন পেপার সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে তা দিয়ে ভাসমান নৌকার মতো ব্যবস্থা করে ধান সংগ্রহ করতে পারেন।”

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গুমানী ও বড়াল নদীর পানি আকস্মিকভাবে বাড়ায় রুপসী সুইচগেট, বামুনজান, দিলপাশার দহ ও বংকিরাট রেলব্রিজ ক্যানেলের মাধ্যমে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ে। এতে খানমরিচ, দিলপাশার ও অষ্টমনিষা ইউনিয়নের জমিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন জাহানের পক্ষ থেকে এসও রনজিত বর্মণ জানান, আগাম সতর্কতা দেওয়া হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকেরা ধান কাটতে পারেননি। ফলে মাঠে থাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। তবে ধান কাটার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে পারলে ক্ষতি সীমিত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার জানান, “পানি বাড়ার সম্ভাবনা দেখে আমরা আগেই সতর্ক বার্তা দিয়েছিলাম। তবে মাঠে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় কিছু ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কৃষি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”