বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত ঘিরে টানাপোড়েন চরমে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোটাটি স্থগিত ঘোষণা করলেও তা মেনে নেননি আন্দোলনকারীরা। তাদের সোজাসাপ্টা দাবি, স্থগিত নয় বরং পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে।
শনিবার রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পোষ্য কোটা সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবেলায় রোববার ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তকে অর্ধেক সমাধান বলে মনে করছেন। তাদের বক্তব্য, উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে কোটা বাতিল করতে হবে, নইলে আন্দোলন চলবেই।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি গণমাধ্যমকে বলেন, “স্থগিত মানে ভবিষ্যতে আবারও কোটা ফিরিয়ে আনা হতে পারে। আমরা চাই এর চূড়ান্ত বাতিল।”
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার ১৮ সেপ্টেম্বর, যখন ভর্তি উপকমিটির সভায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন।
শনিবার দুপুরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে বাসভবনে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা বাসভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম সংবাদ সম্মেলন করে সহ-উপাচার্য ও অন্যান্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার অভিযোগ তুলে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একইসঙ্গে তিনি রোববার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা রাত সোয়া ১১টার দিকে জুবেরী ভবন থেকে সরে গিয়ে প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে থাকেন এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রীও বিক্ষোভে অংশ নেন।
অবশেষে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে প্রশাসন রাত ১টার দিকে পোষ্য কোটা স্থগিতের ঘোষণা দিলেও আন্দোলনকারীদের দাবি এখন একটাই—“বাতিল ছাড়া অন্য কোনো সমাধান মানা হবে না।”