Home আন্তর্জাতিক সরবরাহ বাড়ার শঙ্কায় তেলের বিশ্ববাজার চাপে

সরবরাহ বাড়ার শঙ্কায় তেলের বিশ্ববাজার চাপে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

তেলের বাজারে সাম্প্রতিক অস্থিরতার মধ্যেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের সাময়িক বিরতির পর বাজারে ইতিবাচক সাড়া মিললেও, দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতার অনিশ্চয়তা এবং সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা তেলের দামে চাপ তৈরি করছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১১ সেন্ট কমে দাঁড়ায় ৬৪ ডলার ৮৫ সেন্টে, যা ০.২ শতাংশ হ্রাস। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮ সেন্ট কমে হয় ৬১ ডলার ৮৭ সেন্ট।

সোমবার উভয় বেঞ্চমার্কই প্রায় ১.৫ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে দিন শেষ করে, যা ছিল ২৮ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৃদ্ধির পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির প্রভাব রয়েছে।

তবে আইএনজি ব্যাংকের বিশ্লেষকরা এক ইমেইলে সতর্ক করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিরতি অবশ্যই স্বস্তিদায়ক, কিন্তু পরবর্তী ৯০ দিনে কী ঘটবে তা এখনও অত্যন্ত অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তা বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”

বিশ্লেষক ওয়াং তাও জানিয়েছেন, বাণিজ্য ঘাটতি ও যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সমস্যায় চীনের ভূমিকা নিয়ে যেসব মৌলিক মতপার্থক্য আছে, তা এখনও থেকেই যাচ্ছে।

এদিকে বাজারে নজর এখন সরবরাহ বৃদ্ধির দিকে। আইএনজি’র বিশ্লেষকরা বলছেন, “চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও, ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাজারে প্রাচুর্য তৈরি করবে।” ওপেক এপ্রিল থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি উৎপাদন বাড়িয়েছে, এবং মে মাসে উৎপাদন বেড়েছে দৈনিক প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল।

তবে চাহিদার দিক থেকেও কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিত রয়েছে। জেপি মর্গ্যান বলছে, “তেলের দামে সাম্প্রতিক পতনের মধ্যেও পরিশোধিত জ্বালানির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ১৫ জানুয়ারির শিখর থেকে ২২ শতাংশ কমলেও, রিফাইনারি মার্জিন ও জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।”

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পরিশোধন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় পেট্রোল ও ডিজেলের সরবরাহ সীমিত হচ্ছে। এর ফলে আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়ছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ বা হঠাৎ কারখানা বন্ধে বাজার দামে বড়সড় উত্থানের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

লন্ডনের এলএসইজি প্রাইসিং ডেটা অনুসারে, মে মাসে সিঙ্গাপুরে জটিল পরিশোধন মার্জিন প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬ ডলার ৬০ সেন্টে্। এপ্রিল মাসে ছিল মাত্র ৩ ডলার ৬৫ সেন্ট।