
জানাজায় থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ও কূটনীতিকরা
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই মহাপ্রয়াণে দেশজুড়ে বইছে শোকের ছায়া। প্রিয় নেত্রীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানাতে এখন প্রস্তুত গোটা জাতি।
মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন ও আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সংক্রান্ত এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মরহুমার শেষ বিদায়ে কোনো ধরনের ত্রুটি রাখতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বেগম জিয়ার কফিন জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হবে। এই যাত্রাপথ এবং জানাজার স্থান সুরক্ষিত রাখতে ১০ হাজারেরও বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। এছাড়াও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শফিকুল আলম আরও জানান, বুধবার বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া এভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই নামাজে জানাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা জানাজায় উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও সাধারণ ছুটি
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে সরকার দেশজুড়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এছাড়া জানাজার দিন অর্থাৎ বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে সর্বস্তরের মানুষ নির্বিঘ্নে জানাজায় শরিক হতে পারেন। প্রেস সচিব নিশ্চিত করেছেন যে, মরদেহ স্থানান্তর থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।
শেষ ঠিকানা: শহীদ জিয়ার পাশে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে। দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই আর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী আবারও ফিরে যাচ্ছেন তাঁর জীবনসঙ্গীর পাশে, যেখানে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন।
গৃহবধূ থেকে কিংবদন্তি নেতা
একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে পরিস্থিতির প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আসা খালেদা জিয়া যেভাবে বাংলাদেশের রাজনীতির শীর্ষ নেতৃত্বে আরোহণ করেছিলেন, তা এক জীবন্ত ইতিহাস। তাঁর প্রয়াণে আজ সেই ইতিহাসের একটি দীর্ঘ পরিচ্ছেদের সমাপ্তি ঘটল। এভারকেয়ার হাসপাতালের হিমঘর থেকে বুধবার যখন তাঁর কফিন বের করা হবে, তখন সেই যাত্রাপথে লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত বিদায় কেবল একজন নেতাকে নয়, বরং একটি আদর্শের প্রতি মানুষের ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে।









