বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা পূর্ণ ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই ঐতিহাসিক জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
স্মরণকালের এই জানাজায় মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ধারণা করা হচ্ছে, এটি কেবল বাংলাদেশ নয়, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে কোনো মুসলিম নারীর বৃহত্তম জানাজা। সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ছাপিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও শাহবাগ থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তিল ধারণের জায়গা না থাকায় সাধারণ মানুষ রাস্তার যে যেখানে পেরেছেন, সেখানেই দাঁড়িয়ে জানাজায় শরিক হন।
বেগম জিয়ার জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং বিদেশি কূটনৈতিক ও রাষ্ট্রদূতরা এই শেষ বিদায়ে অংশ নেন।
এর আগে সকাল পৌনে ১২টার দিকে লাল-সবুজ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ফ্রিজার ভ্যানে করে বেগম জিয়ার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়। সেনাবাহিনী হিউম্যান চেইন তৈরি করে রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে মরদেহটি সেখানে নিয়ে আসে। সংসদ ভবন এলাকায় মরদেহ পৌঁছালে সেখানে এক অত্যন্ত আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
দিনের শুরুতে সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করে গুলশানে নেওয়া হয়। প্রথমে ‘ফিরোজা’য় নেওয়ার কথা থাকলেও পরে মরদেহবাহী গাড়িটি তারেক রহমানের গুলশান অ্যাভিনিউয়ের বাসভবনে নেওয়া হয়। সেখানে স্বজন ও নেতাকর্মীরা শেষবারের মতো প্রিয় নেত্রীকে শ্রদ্ধা জানান। বেলা ১১টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে সংসদ ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে মরদেহবাহী ফ্রিজার ভ্যানটি।
বেগম খালেদা জিয়াকে তার স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। তার মৃত্যুতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে দেশ। এ উপলক্ষে আজ বুধবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা আজ ঢাকায় উপস্থিত হয়েছেন।










