বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: খিচুড়ি। চালে-ডালে ঘাঁটা এই সহজপাচ্য পদটি যুগের পর যুগ ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে একান্ত আপন। আকাশে মেঘ জমলেই অনেক বাড়িতে এখনও এক হাঁড়ি খিচুড়ি বসে, সঙ্গে আলু ভাজা বা ডিম ভাজা, যেন বৃষ্টির দিনের উৎসব।
প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবীর লেখা থেকে জানা যায়, এই পদ পূর্বে ‘কৃসরা’ নামে পরিচিত ছিল। সোনা মুগ ডাল আর চালের সহজ মিশ্রণে তৈরি হলেও খিচুড়ির গুণ অনেক: এক দিকে বলবর্ধক, অন্য দিকে সহজ হজমের কারণে পথ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। সর্দি-জ্বর, পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে সুস্থ থাকার দিনেও খিচুড়ি এক স্বস্তির খাবার।
তবে কেবল বাঙালির মধ্যেই নয়, খিচুড়ির প্রভাব বিস্তৃত হয়ে উঠেছে আরও বহু স্থানে। হায়দরাবাদের নিজামদের রান্নাঘরেও খিচুড়ি জায়গা করে নিয়েছিল রাজকীয় মর্যাদায়, যেখানে কিমা মিশিয়ে তৈরি হতো এক অনন্য স্বাদ। এমনকি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহেবরাও খিচুড়ির স্বাদে মুগ্ধ হয়ে তা রপ্তানি করেছিলেন ইংল্যান্ডে। সেখানেই এর নতুন নাম হয় ‘কেজরি’, যা আজও ইংলিশ ব্রেকফাস্টে দেখা যায়।
খিচুড়ি যেন শুধু খাদ্য নয়, এক রসনাজগতের গল্প। আজ পাঠকদের জন্য রইল খিচুড়ির দুইটি বিশেষ রেসিপি—একটি স্বাস্থ্যকর ডালিয়ার ভুনি খিচুড়ি, অন্যটি হাঁসের ডিম সহযোগে মুসুর ডালের খিচুড়ি।
ডালিয়ার ভুনি খিচুড়ি
উপকরণ:
ডালিয়া, ভাজা সোনা মুগ ডাল, গোটা ও গুঁড়ো মশলা, আদা, হিং, কাঁচা লঙ্কা, কাজু, কিশমিশ, ঘি, নুন-চিনি।
প্রণালী:
ডালিয়া ও ডাল ধুয়ে প্রস্তুত রাখুন। ঘিতে ফোড়ন দিয়ে মশলা ও ডাল-ডালিয়া দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। অল্প অল্প করে গরম জল দিয়ে সিদ্ধ করুন। শেষে ঘি ও গরম মশলা দিয়ে দমে রেখে পরিবেশন করুন।
মুসুর ডাল ও হাঁসের ডিমের খিচুড়ি
উপকরণ:
সিদ্ধ চাল, মুসুর ডাল, ছোট পেঁয়াজ, কাঁচা ও শুকনো লঙ্কা, হলুদ-জিরে, পাঁচফোড়ন, আদা বাটা, সরষের তেল, হাঁসের ডিম।
প্রণালী:
ডাল সিদ্ধ করে চালের সঙ্গে ফুটিয়ে নিন। আলাদা কড়াইয়ে ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ-আদা ভেজে তা খিচুড়ির মিশ্রণে দিন। শেষে ডিম ভেজে পরিবেশন করুন অথবা খিচুড়ির মধ্যেই মিশিয়ে দিন।
খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়—এ এক আবেগ, এক ঐতিহ্য। বৃষ্টিভেজা দুপুর, অসুস্থতার পথ্য কিংবা উৎসবের পাতে, খিচুড়ি সবখানেই আপন। একে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে অসংখ্য স্বাদ ও স্মৃতির গল্প।
🔔 আরও এমন রেসিপি ও খাদ্যসংস্কৃতির গল্প পেতে ফলো করুন: businesstoday24.com