বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে গণঅধিকার পরিষদ। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। উপস্থিত ছিলেন দলের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানসহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
বৈঠকের সূচনায় বক্তব্য দেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, “২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের সূচনা। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে। এই পরিবর্তনকে অর্থবহ করতে কেবল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথেষ্ট নয়; সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, আলোচনা যেন কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং তা রাজপথের আন্দোলন ও সক্রিয় রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি সর্বজনীন জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বৈঠকে বলেন,”গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী শাসনের চাপে নিপীড়নের শিকার। ভবিষ্যতে যেন কেউ এ ধরনের দমন-পীড়ন চালাতে না পারে, সে জন্য জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন,”২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন দীর্ঘ আট মাস ধরে চলে। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া প্রমাণ করে, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ নয় — জাতীয় স্বার্থই আমাদের প্রাধান্য।”
কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং ইফতেখারুজ্জামান। তারা উভয়েই জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কথা বলেন।
বৈঠকের মাধ্যমে উভয় পক্ষ একটি বৃহত্তর জাতীয় সংলাপ আয়োজন এবং ভবিষ্যতে যৌথ কর্মসূচির বিষয়ে নীতিগত সম্মতিও প্রকাশ করে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাদের লক্ষ্য — সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে একটি অংশগ্রহণমূলক, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করা।
২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন নুরুল হক নূর, রাশেদ খানসহ অনেকে, যারা পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হন। সেই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকেই আজকের জাতীয় ঐকমত্যের উদ্যোগকে অনেকে দেখছেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন সুযোগ হিসেবে।