বিনোদন ডেস্ক: ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বলিউডের সুপারস্টার সালমান খানের বাড়িতে ঢুকলেই চোখে পড়ে একটি গণেশমূর্তি। এই মূর্তি তাদের বাড়িতে প্রায় ১৫ বছর ধরে আছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায় সালমানের গণেশপূজার মুহূর্ত, যা অনুরাগীদের মধ্যে মুগ্ধতা সৃষ্টি করেছে। তবে কিছু মুসলিম ভক্তের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছিল।
সেলিম খান জানিয়েছেন, পরিবারে গণেশপূজা চালু হয়েছিল তার বাবার আমল থেকেই। তিনি নিজে শৈশব থেকেই হিন্দু ধর্মের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। ইন্দোরের একটি হিন্দু এলাকায় বড় হওয়ার কারণে তার বন্ধুরা প্রধানত হিন্দু ছিলেন। স্কুলে মাত্র তিনজন মুসলিম সহপাঠী থাকলেও বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল হিন্দু সহপাঠীদের সঙ্গে। তিনি মনে করেন, এই বন্ধুত্ব এবং পারিবারিক অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি হিন্দু-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

বিয়ের পরে সেলিম খান হিন্দু পরিবারের মেয়ে সুশীলা চরককে বিয়ে করেন। বিবাহের পরে তার নাম পরিবর্তন হয়ে ‘সালমা খান’ হয়। অনেকেই মনে করেন, এই কারণেই খান পরিবারে গণেশপূজা পালিত হচ্ছে। তবে সেলিম খান স্পষ্ট করেছেন, পরিবারটি তার স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের আগেই গণেশপূজা শুরু করেছিল। তিনি বলেন, “বিয়ের আগে থেকে আমাদের পরিবারে গণেশপূজা চলে আসছে। এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকেও এতে কোনো আপত্তি ছিল না।”
সেলিম খান আরও বলেন, তার নিজের শৈশব থেকেই হিন্দু-পারিবারিক পরিবেশে বড় হওয়ার কারণে তিনি সব ধর্মের প্রতি সমান সহানুভূতিশীল। তিনি মনে করেন, ভিন্নধর্মে বিবাহের কারণে গণেশপূজা করার ধারণা সত্য নয়। বরং এটি পরিবারের ঐতিহ্য, যা পুত্র সালমানের মধ্যেও ফুটে উঠেছে।
বলিউডে সালমান খানকে বিভিন্ন পূজা-পার্বণে অংশগ্রহণ বা মন্দির দর্শনের জন্য দেখা যায়। এটি শুধুমাত্র পারিবারিক প্রভাব নয়, তার নিজের বিশ্বাস ও শৈশবের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। সেলিম খানের কথায়, সম্প্রীতির পরিবেশে বড় হওয়া এবং হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ভেদাভেদ না দেখার অভিজ্ঞতা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মানসিকতায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
সামগ্রিকভাবে, সালমান খানের গণেশপূজা কেবল একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং একটি পারিবারিক ঐতিহ্য এবং শৈশবের সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ, যা তার ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক জীবনকে স্পর্শ করেছে। অনুরাগীরা এটি দেখে মুগ্ধ হলেও, কিছু সমালোচনার মাঝেও পরিবারটি এই ঐতিহ্য বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।