বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রংপুর: পীরগাছা উপজেলায় অজানা এক প্রাণঘাতী রোগে দুই শতাধিক গরু ও ছাগল মারা যাওয়ায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় খামারিরা জানিয়েছেন, প্রাণঘাতী এই রোগে পশুর শরীরে হঠাৎ জ্বর দেখা দিলে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটে। উপজেলার শতাধিক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারি এর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগকে জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। খামারিরা জানিয়েছেন, গত এক মাস ধরে পীরগাছার বিভিন্ন গ্রামে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। অনন্তরাম গ্রামের মোজাফফর মিয়া বলেন, “আমার তিনটি গরু ও চারটি ছাগল মারা গেছে। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে গবাদিপশু পালন করেছিলাম। এখন আমি নিঃস্ব।”
খোকা মিয়া বলেন, “একদিন জ্বর দেখা দিলো, পরদিনই মারা গেল। আমার ছয়টি পশু মারা গেছে। আতঙ্কে বাকিগুলো কম দামে বিক্রি করেছি। গোয়ালঘর এখন শূন্য।”
খামারিরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অফিসে থাকলেও সাড়া দেন না। রবিউল ইসলাম বলেন, “অফিসে গেলে দেখা যায় কর্মকর্তা ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ব্যস্ত। আমরা কিছু বলতে পারি না।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে পুরো উপজেলায় গবাদিপশুর বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “জনবল সংকটের কারণে আমরা মাঠে পর্যাপ্তভাবে যেতে পারিনি। তবে আজ থেকে দুটি টিম গরু ও ছাগলের টিকাদান শুরু করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ঢাকার বিশেষজ্ঞ দল এলেই প্রকৃত রোগ শনাক্ত করা সম্ভব হবে।”
ডা. একরামুল হক আরও বলেন, “স্থানীয়ভাবে যতটুকু সম্ভব করা হচ্ছে, তবে রোগটি যদি ছোঁয়াচে হয়, তবে দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
আপনি যদি খামারি বা পশুপালন নিয়ে যুক্ত থাকেন, সময়মতো সতর্কতা ও টিকাদান নিশ্চিত করুন। এই সংবাদটি শেয়ার করে অন্য খামারিদেরও সচেতন করুন।