Home জাতীয় সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে গলায় জুতা পরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা

সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে গলায় জুতা পরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা

রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় জনগণ সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে আটক করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। ছবি: সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর উত্তরা এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে গণবিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। আজ রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরা সেক্টর ৫ এলাকায় স্থানীয় জনতা তাকে ঘিরে ধরে গলায় জুতার মালা পরিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নুরুল হুদা হঠাৎ করে ওই এলাকায় আসলে তাকে চিনে ফেলে স্থানীয় জনতা। অতীতে তার ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাকে ঘিরে ধরে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে কেউ একজন তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। পরে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি টহল টিম এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, “স্থানীয় জনতা নুরুল হুদাকে আমাদের কাছে তুলে দিয়েছে। তাদের দাবি, তিনি নির্বাচন কমিশনার থাকা অবস্থায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। আমরা তাকে বর্তমানে থানায় রেখেছি এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এর আগে, একই দিন বিএনপি শেরে বাংলা নগর থানায় কে এম নুরুল হুদা এবং আরও দুই সাবেক নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়, যেখানে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘রাতের ভোট’ কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী কারচুপির সহায়ক ভূমিকার অভিযোগ রয়েছে।

২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কে এম নুরুল হুদা। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ তোলে যে, নির্বাচন রাতে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে প্রহসনে পরিণত হয়েছিল। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিরোধী দলের তীব্র আন্দোলন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই ঘটনার নেপথ্যে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এখন আর কেবল মুখের ভাষায় নয়, কর্মে প্রকাশ পাচ্ছে।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, নুরুল হুদা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন এবং কিছু মানুষ তার আশপাশে স্লোগান দিচ্ছে। এ ঘটনার নিন্দা ও সমর্থনে বিভক্ত হয়েছে নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া।

এ ঘটনায় প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।