আনোয়ার আহমেদ, কুয়ালালামপুর ( মালয়েশিয়া): মালয়েশিয়া থেকে ভারতে পাচারকালে বন্যপ্রাণীর একটি চালান ধরা পড়েছে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে। লাগেজের ভিতরে করে বিরল প্রজাতির গিবন বানর পাচার রুখে দিয়েছে মালয়েশিয়ান বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সি।
আটক করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে। মুম্বাইগামী ফ্লাইট ধরার আগ মুহূর্তে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা চেকপয়েন্টে ধরা পড়েন তিনি। ৩৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির লাগেজ খুলে দেখা যায়, ভেতরে বিশেষভাবে মোড়ানো অবস্থায় রাখা আছে চারটি কালো-হাতর গিবন। প্রাণীগুলোর বাজারমূল্য আনুমানিক ৩০ হাজার মালয়েশীয় রিংগিট বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আটক হওয়ার পর তাকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আয়েরোপলিস পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নেওয়া হয়। মালয়েশিয়ার বন্য প্রাণি ও ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ এই প্রাণীগুলো নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এয়ারপোর্টের মতো ঝুঁকিপূর্ণ রুট দিয়ে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা রুখতে নতুন করে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যার অংশ হিসেবেই এই অভিযান চালানো হয়।
ঠিক একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল ২০ এপ্রিল ২০২৫ রাতে। ২১ বছরের এক তরুন পাচারের চেষ্টা করছিলেন চারটি গিবন ও ছয়টি কচ্ছপ। তিনিও একইভাবে লাগেজে প্রাণীগুলো লুকিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন এবং পরে ধরা পড়েন।
এই দুটি ঘটনার মিল দেখে বোঝা যাচ্ছে, কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এখন আন্তর্জাতিক পাচারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ রুট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার গিবনের মতো বিরল প্রাণী পাচারের ঘটনা মালয়েশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর এবং আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের সক্রিয়তার দৃষ্টান্ত। পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এগুলো শুধু আইনগত নয়, নৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়ও। গিবনের মতো বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী পাচার কেবল পরিবেশ নয়, জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনেক সময় অস্ত্র বা মাদক পাচারও সংগঠিত হয়।
মালয়েশিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় এখন বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে যৌথ নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।