Home সারাদেশ লুটের মুহূর্তে জেগে উঠল প্রতিবাদ, সমাজের চোখে গৃহবধূ এখন নায়িকা

লুটের মুহূর্তে জেগে উঠল প্রতিবাদ, সমাজের চোখে গৃহবধূ এখন নায়িকা

পালানোর সময় স্থানীয়দের হাতে আটক দুজন। সংগৃহীত ছবি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:জুমার নামাজের সময় প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছিল আখাউড়া পৌর এলাকার নারায়ণপুর। পুরুষেরা মসজিদে, বাসাগুলো অনেকটাই ফাঁকা। এই সময়টাকেই বেছে নিয়েছিল এক তরুণ-তরুণীর সংঘবদ্ধ লুটের পরিকল্পনা। কিন্তু পরিস্থিতি মোড় নেয় অন্যদিকে, এক সাহসী গৃহবধূর চিৎকার ও প্রতিবাদে।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে নারায়ণপুরের জয়নাল মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ওই সময় বাড়িতে ছিলেন শুধু তার স্ত্রী। পানি চাওয়ার অজুহাতে বাড়িতে প্রবেশ করেন এক তরুণী সুমাইয়া আক্তার (২০)। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুমাইয়ার সঙ্গে আসা সাইফুল ইসলাম ওরফে শাহীন (২৪) ঘরে ঢুকে পড়েন। তিনি গৃহবধূকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন, মুখে কাপড় গুঁজে দেন, হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র।

তাদের উদ্দেশ্য ছিল ঘরের স্বর্ণালংকার লুটে নেওয়া। কিন্তু জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষায় মরিয়া গৃহবধূ কোনোভাবে বাঁধন ছিঁড়ে চিৎকার শুরু করেন। তার সেই আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। মুহূর্তেই ঘেরাও করে ফেলেন বাড়ি, পালানোর চেষ্টা করা দুইজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

আটককৃতরা কসবা উপজেলার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে আখাউড়ার কলেজপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।

বাড়ির মালিক জয়নাল মিয়া বলেন, “নামাজের সময় মানুষজন না থাকার সুযোগেই তারা চুরি করতে চেয়েছিল। আমার স্ত্রীর বুদ্ধি ও সাহসে তারা ধরা পড়েছে। তবে ঘর থেকে কিছু মালামাল এখনো পাওয়া যায়নি।”

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ছমি উদ্দিন জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, সমাজের ভেতর লুকিয়ে থাকা অপরাধপ্রবণ কিছু মানুষ সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যখন সজাগ ও সাহসী হয়, তখন অপরাধীদের থামানো সম্ভব।


আপনাদের মতামত আমাদের প্রয়োজন
আপনি কি আপনার এলাকায় এমন নিরাপত্তা হুমকি অনুভব করেছেন? সমাজে সজাগ নাগরিক হিসেবে আপনি কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করেন? নিচের মন্তব্য ঘরে আপনার অভিজ্ঞতা বা মতামত জানান।