বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মণ্ডল পাড়ার ইয়াজ উদ্দিন খানের ছেলে আজাদ খান (৪৭) ইরাকে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। মাত্র তিন মাস আগে স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা খরচ করে তিনি প্রবাস জীবনের জন্য ইরাক যান।
আজাদের পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, কলেজ পড়ুয়া একটি ছেলে এবং ষষ্ঠ শ্রেণির এক মেয়ে সন্তান রয়েছেন। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়ার জলিল সরদার পাড়ার প্রবাসী মোহনের ছেলে বাবুল আজাদকে তার তত্ত্বাবধানে ইরাকে পাঠান। বাবুল আজাদের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় করেন। কষ্টে ধারদেনার মাধ্যমে টাকা জোগানো হয়।
এক সপ্তাহ আগে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে আজাদ নিখোঁজ হন। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাসী লিটন নামের একজন ব্যক্তি আজাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, আজাদকে হত্যা করে তিন টুকরো লাশ বস্তায় ভরে ময়লার ভাগারে ফেলে রাখা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা দুর্গন্ধ পেয়ে বস্তার মুখ খোলার সময় মানুষের লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম বলেন,
“অনেক কষ্ট করে ধারদেনার মাধ্যমে আমি আমার স্বামীকে বাবুলের মাধ্যমে ইরাকে পাঠাই। বাবুল তার যে কাজ দেয়ার কথা ছিল, তা না দিয়ে অন্য কাজে পাঠায়। আমার স্বামী বারবার বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরেনি। যদি ফোন ধরতেন, হয়তো আজ আমার স্বামীর এই করুণ পরিণতি হতো না। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।”
নিহতের মা নবিরন বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমার ছেলেকে তারা বিদেশে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই এবং আমার ছেলের লাশ ফেরৎ চাই।”
ইরাক থেকে বাবুল মুঠোফোনে জানান, আজাদকে তিনি যেখানে দিয়েছিলেন, সেখান থেকে কুমিল্লার সোহাগ নামের একটি যুবক তাকে অন্য একটি দোকানে কাজের জন্য নিয়ে যায়। দোকানের মালিক কফিল তাকে বাড়ির ময়লা ও আশপাশের আগাছা পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করেন। পরে কফিলের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে বাক-বিতন্ডা হয়। শোনা যাচ্ছে, এই বিরোধের জেরে কফিল আজাদকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখে। পুলিশ কফিলকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজাদের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা হত্যার দ্রুত বিচার এবং মরদেহ দেশে ফেরতের দাবি জানিয়েছে।