Home আন্তর্জাতিক ১৫ হাজার গোলাপে লেখা গাজার কান্না! শিল্পীর স্পর্শে নির্মম বাস্তবতা

১৫ হাজার গোলাপে লেখা গাজার কান্না! শিল্পীর স্পর্শে নির্মম বাস্তবতা

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পাকিস্তানের লাহোরের আলহামরা কালচারাল কমপ্লেক্সে শুরু হয়েছে এক অভিনব ও বেদনাবিধুর প্রদর্শনী— ‘Roses of Humanity’,  ১৫ হাজার হাতে তৈরি গোলাপে সাজানো এক গোলাপবাগানে স্মরণ করা হচ্ছে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত শিশুদের। এই উদ্যোগ যৌথভাবে আয়োজন করেছে ‘Labour & Love’ এবং ‘Bargain Basement Sale (BBS)’। প্রদর্শনীটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ১৮ মে পর্যন্ত।

প্রদর্শনীতে প্রবেশ করলেই নাকে আসে গোলাপের হালকা ঘ্রাণ, বাতাসে যেন বয়ে আনে এক নীরব শোকের বার্তা। “প্রতিটি গোলাপ একটি শিশুর প্রতীক, যারা গাজায় মারা গেছে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত,” — উদ্বোধনী দিনে এক আবেগঘন কণ্ঠে বলেন প্রদর্শনীর ধারণাপ্রদানকারী ও সমন্বয়ক নুরিয়া রফিক-ইকবাল।

প্রতিটি গোলাপ তৈরি হয়েছে পুনর্ব্যবহৃত কাপড়ের টুকরো দিয়ে, যা সেলাই করেছেন লাহোরের শেখুপুরা ও মাহমুদ বুটির ২০ জন নারী শিল্পী। দিনে প্রায় ২০০টি করে গোলাপ তৈরি হয়েছে, আর পুরো প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছে প্রায় ছয় মাস।

গ্যালারির অভ্যন্তরে গোলাপের গুচ্ছগুলি ঝোপের আকারে সাজানো, আলোকস্বল্প পরিবেশে দর্শনার্থীরা ধীরে হেঁটে চলেন গোলাপের ভেতর দিয়ে। অনেক গোলাপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্লাস্টিক ট্যাগ— যেখানে লেখা রয়েছে নিহত শিশুর নাম।

প্রদর্শনী চলাকালীন প্রদর্শিত হয় ন’মিনিটের একটি প্রামাণ্যচিত্র, যেখানে ফুটে ওঠে কিভাবে তৈরি হয়েছে এই গোলাপগুলি, কারা বানিয়েছেন এবং কেন। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় নিহত শিশুদের প্রতি সম্মান জানিয়ে। পরে একটি বিশেষ আলো প্রক্ষেপণের মাধ্যমে গোটা গোলাপবাগান রূপ নেয় Rosette Nebula নামের একটি মহাজাগতিক ফুলের দৃশ্যপটে।

প্রদর্শনীর দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে শিল্পীদের কাজের ফটো, এবং দেয়ালে টানানো হয়েছে নিহত ১৫ হাজার শিশুর নামের তালিকা। দর্শনার্থীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, অতিরিক্ত ৩৮০০ শিশুর নাম ও বয়স তারা নিজের হাতে লিখে অ্যাক্রিলিক গোলাপের পাশে ঝুলিয়ে দিতে, যারা পরবর্তীতে সংযুক্ত হয়েছে তালিকায়।

প্রদর্শনীস্থলের বাইরে একটি ছোট্ট স্টলে বিক্রি হচ্ছে চ্যারিটি টি-শার্ট ও মোমবাতি। এর পাশাপাশি দর্শনার্থীরা চাইলে প্রত্যেকটি গোলাপ স্পনসর করতে পারেন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে, যার সমস্ত আয় যাবে PCRF-এর Gaza Child Amputee Fund-এ। এই তহবিল ব্যবহার হবে গাজায় আহত শিশুদের জন্য প্রস্থেটিক অঙ্গ তৈরিতে। “আমরা গর্বিত, আমরা হাতে কাজ করি, রোজগার করি আর পরিবারকে চালাই— পাশাপাশি এমন কিছুতে অংশ নিই যা শুধু আমাদেরই নয়, গোটা মানবতাকে ছুঁয়ে যায়,” বলেন নারী দলনেতা সালমা আরফা।