Home আন্তর্জাতিক লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ দফা বিমান হামলা

লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ দফা বিমান হামলা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর জব্দ করা ইসরাইল-সম্পর্কিত পণ্যবাহী জাহাজ ‘গ্যালাক্সি লিডার’-এ হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমান বাহিনী। লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন নেটওয়ার্কের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) ইয়েমেন উপকূলে অবস্থানরত গ্যালাক্সি লিডারকে লক্ষ্য করে মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো তিন দফা হামলা চালায়।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনী সমুদ্রপথে অভিযান জোরদার করে। তারই অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর লোহিত সাগরে হেলিকপ্টার অভিযান চালিয়ে গ্যালাক্সি লিডার জাহাজটি জব্দ করে ইয়েমেনি বাহিনী।

জাহাজটির পরিচয় ও মালিকানা:

গ্যালাক্সি লিডার একটি বাহামা-পতাকাবাহী এবং জাপানি কোম্পানির পরিচালিত জাহাজ, যার আংশিক মালিকানায় রয়েছেন ইসরাইলি ব্যবসায়ী আব্রাহাম (রামি) উঙ্গার। ইয়েমেন দাবি করে, এটি ইসরাইলের অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে জড়িত হওয়ায় জাহাজটি আটক করা হয়।

চলমান পরিস্থিতি:

২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি, যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ গ্যালাক্সি লিডারের ২৫ জন ক্রুকে মুক্তি দেয়। তবে জাহাজটি আটকই থাকে।
ইয়েমেনি আনসারুল্লাহ আন্দোলন (হুথি) গত ৭ মার্চ ইসরাইলকে সতর্ক করে বলেছিল, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া হলে ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে সামুদ্রিক অভিযান আবারও শুরু করা হবে। সেই হুঁশিয়ারির কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন বাহিনী এই বিমান হামলা চালাল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান:

মার্কিন প্রশাসন বরাবরই লোহিত সাগরের আন্তর্জাতিক শিপিং রুটের নিরাপত্তা বজায় রাখার কথা বলছে। বিশেষ করে ইসরাইল-সংক্রান্ত শিপমেন্ট ও পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষার জন্য তারা ‘স্বাধীনতা অভিযান’ শিরোনামে সামরিক পদক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়েমেনি বাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে তারা “আন্তর্জাতিক নৌ চলাচলে বাধাদান” বলে আখ্যা দিয়েছে।

ইয়েমেনি প্রতিক্রিয়া:

এ হামলার ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী বা আনসারুল্লাহ হুথি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন হামলার জবাবে ইয়েমেন শিগগিরই প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে।

পটভূমি:

ইসরাইলের গাজা অভিযানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইসরাইলবিরোধী অনুভূতি তীব্র হয়ে ওঠে। ইয়েমেনি হুথি আন্দোলন গাজা সংহতির অংশ হিসেবে সরাসরি সামুদ্রিক ও সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।