জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকায় নতুন একটি প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান ও উৎপাদন কোম্পানি বাপেক্স শনিবার রাতে খনন কাজের সময় গ্যাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছে।
জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ প্রকল্পের ড্রিলিং সুপারিনটেনডেন্ট এবং প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মুজাম্মেল হক জানান, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ২ হাজার ৬০০ মিটার গভীরতায় গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বর্তমানে ‘ড্রিল স্টেম টেস্টিং’ (ডিএসটি) চলছে। এই পরীক্ষার পর গ্যাসের প্রকৃত মজুত এবং উৎপাদন সক্ষমতা নির্ধারণ করা যাবে।
মুজাম্মেল হক আরও জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন প্যাসকেল চাপে গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তবে আগামী ১৫ দিন ধরে চালানো হবে বিস্তারিত বিশ্লেষণ। সেই ভিত্তিতেই জানা যাবে গ্যাস ক্ষেত্রটি কতটা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক।
বর্তমানে গ্যাস বিভিন্ন ভূস্তর থেকে নির্গত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। পর্যবেক্ষণ শেষে জানা যাবে কোন স্তর সবচেয়ে কার্যকর উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত।
বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার দশক আগেই জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার তরতাপাড়া গ্রামে ভূকম্পন-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে গ্যাসের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। ১৯৮০ সালে চালানো প্রাথমিক অনুসন্ধানেই কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাপেক্স এলাকাটিতে ভূকম্পন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে এবং ২০১৫-১৬ সালে একটি ক্লোজ গ্রিড ভূকম্পন জরিপ সম্পন্ন করে।
পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি জামালগঞ্জ-১ অনুসন্ধান কূপে আনুষ্ঠানিক খনন কাজ শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই গ্যাস ক্ষেত্র বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারযোগ্য হলে উত্তরবঙ্গের জ্বালানি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাপেক্সের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, এই ক্ষেত্র জাতীয় গ্যাস উৎপাদনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।