বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এসেছে। দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের রাজকীয় ফরমান অনুযায়ী শেখ সালেহ বিন ফাওযান আল ফাওযানকে নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই পদটি সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও ফতোয়া প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ দারুল ইফতা বা স্থায়ী ফতোয়া কমিটির প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়। গ্র্যান্ড মুফতি পদটি সেপ্টেম্বরে মারা যাওয়া সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল আশ শেইখের মৃত্যুর পর শূন্য ছিল।
শেখ সালেহ আল ফাওযানকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রক্ষণশীল ধারার একজন বিশিষ্ট আলেম হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সিনিয়র আলেম পরিষদ ও ইসলামী ফিকহ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নূর আলা আল দরব নামে জনপ্রিয় রেডিও প্রোগ্রামে নিয়মিতভাবে ইসলামিক প্রশ্নোত্তর ও ফতোয়া প্রদান করতেন।
১৯৩৫ সালে সৌদি আরবের আল কাসসীম প্রদেশে জন্ম নেওয়া শেখ ফাওযান রিয়াদের ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সৌদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়াহ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তী সময়ে অধ্যাপক ও ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
ধর্মীয় অধ্যয়নের পাশাপাশি তিনি ইসলামী আইন, ফিকহ ও আকিদাহ বিষয়ে একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত বই ও বক্তৃতা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপকভাবে পড়া ও অনুসৃত হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সালেহ আল ফাওযানের নিয়োগ সৌদি আরবের ধর্মীয় প্রশাসনে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নির্দেশ করে, কারণ কয়েক দশক ধরে এই পদটি সাধারণত আল আশ শেইখ পরিবারভুক্ত ধর্মীয় ব্যক্তিদের হাতে ছিল। তাঁর নিয়োগের মাধ্যমে সৌদি রাজপরিবার হয়তো ধর্মীয় নেতৃত্বে কিছু ভারসাম্য আনতে চাইছে।
তবে ধর্মীয় রক্ষণশীল মতাদর্শের কারণে তিনি নারীর অধিকার, সামাজিক সংস্কার ও শিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কিত বিষয়ে অতীতে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ফলে ভিশন ২০৩০ এর সামাজিক আধুনিকায়নের যুগে তাঁর নেতৃত্বে সৌদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা নমনীয়তা দেখাবে তা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সাম্প্রতিক রাজকীয় ঘোষণার পর সৌদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বার্তায় ধর্মমন্ত্রী ও গ্র্যান্ড মসজিদের ইমামরা শেখ সালেহ আল ফাওযানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন, তাঁর নেতৃত্বে সৌদি আরব ইসলামিক ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পথ অনুসরণ করবে।